বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে গত সাত বছরে পাকিস্তান, ইয়েমেন ও সোমালিয়ায় মার্কিন বিমান হামলায় ১১৬ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এক নির্বাহী আদেশে এ সংখ্যাটি প্রকাশ করা হয়।
প্রকাশিত নিহত বেসামরিকের এ সংখ্যাটি ‘টার্গেট কিলিং’ ও চালকবিহীন বিমানের (ড্রোন) ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক নতুন করে উস্কে দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওবামার মেয়াদকালের ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নিহতের এ সংখ্যা মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর হিসাবকৃত সংখ্যা থেকে অনেক কম বলে জানিয়েছে বিবিসি। অপরদিকে সংখ্যাটি যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকার করা নিহত বেসামরিকের সংখ্যা থেকে অনেক বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সক্রিয় জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে এসব অভিযান পরিচালনা করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। তাদের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা তুলে ধরতেই সংখ্যাটি প্রকাশ করেছে ওবামা প্রশাসন। ওই তিনটি দেশে যুক্তরাষ্ট্রের চালানো বিমান হামলায় নিহত বেসামরিকের সংখ্যার হিসাব রেখে আসছে এমন মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো প্রকাশিত এ সংখ্যায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
‘সেন্টার ফর সিভিলিয়ান ইন কনফ্লিক্ট’ এর নির্বাহী পরিচালক ফেদেরিকো বোরেলো বলেছেন, ‘হোয়াইট হাউসের প্রকাশিত প্রতিবেদনে প্রকৃত সংখ্যাটি মোটেও প্রকাশ পায়নি, এতে অসন্তুষ্ট আমরা।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, পাকিস্তান, ইয়েমেন ও সোমালিয়ায় চালানো ৪৭৩টি বিমান হামলার তথ্য প্রকাশ করেছে ওবামা প্রশাসন। এসব হামলার অধিকাংশই পাকিস্তানে চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ দেশটিতে বিপুল সংখ্যক বেসামরিক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থাগুলো।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে আফগানিস্তান, ইরাক ও সিরিয়ায় চালানো যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় নিহত বেসামরিকদের সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি। এ কারণে নিহত বেসামরিকদের মোট সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীসহ ড্রোন হামলার পক্ষে যারা তারা বলছেন, এসব অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনারত জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর সক্ষমতা অনেক হ্রাস পেয়েছে। বেসামরিক হতাহত এড়াতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার সবরকম চেষ্টা করছে বলে দাবি তাদের।