হোটেলে স্ত্রীকে লুকিয়ে রেখেছিলেন সাকলায়েন!

saklineঅনলাইন ডেস্ক | আপডেট: ১৮:৫৬, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৫ : সিরিজ বা টুর্নামেন্ট চলার সময় ক্রিকেটারদের স্ত্রী কিংবা বান্ধবীদের সঙ্গে রাখা বেশ নিয়মিত ঘটনা। কিন্তু মাঝেমধ্যেই টিম ম্যানেজমেন্ট আপত্তি তোলে এ রীতির বিরুদ্ধে। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে সঙ্গে স্ত্রী রাখার ব্যাপারে হঠাৎই আপত্তি তুলেছিল পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্ট। এ কারণেই কি না, অভিনব এক কায়দায় স্ত্রীকে টিম হোটেলে লুকিয়ে রাখার বুদ্ধি এঁটেছিলেন পাকিস্তানি ঘূর্ণি-জাদুকর সাকলায়েন মুশতাক!
১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানি খেলোয়াড়েরা সস্ত্রীকই থাকছিলেন টিম হোটেলে। কিন্তু সেমিফাইনাল শুরু হওয়ার আগে টিম ম্যানেজমেন্ট হঠাৎ জানায়, স্ত্রীরা আর দলের সঙ্গে থাকতে পারবেন না। হয়তো স্ত্রীদের ফিরে যেতে হবে পাকিস্তানে, নয়তো থাকতে হবে অন্য হোটেলে। অন্যরা যে যার মতো অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিলেও সাকলায়েন স্ত্রীকে সঙ্গে রাখতে বের করলেন চমকপ্রদ এক উপায়।
দুসরা-জনক তাঁর স্ত্রীকে আগেভাগেই পাকিস্তান দল থাকবে এমন সব হোটেলের তালিকা দিয়ে দেন। ভিন্ন ভিন্ন ভেন্যুতে খেলার জন্য পাকিস্তান দল ইংল্যান্ডের এক শহর থেকে অন্য শহরে গিয়ে নির্ধারিত হোটেলে ওঠার আগেই একই হোটেলে গিয়ে উঠতেন সাকলায়েনের স্ত্রী সানা। এরপর সুযোগ বুঝেই চলে আসতেন সাকলায়েনের কক্ষে! কথা হলো, ঘরে অন্য সতীর্থ-কোচ কিংবা টিম ম্যানেজমেন্টের কেউ এলে কী করতেন? এমন প্রশ্নের জবাবে একগাল মুচকি হেসে সাকলায়েন বললেন, ‘কোচ বা ম্যানেজমেন্টের কেউ এলেই সানাকে ঘরের আলমারিতে গিয়ে লুকাতে বলতাম। তারা চলে গেলে আবার সে বের হয়ে আসত! ’ তবে সবার চোখ ফাঁকি দিতে পারেননি সাকলায়েন। সতীর্থ আজহার মেহমুদ ও মোহাম্মদ ইউসুফ নাকি ঠিকই ধরে ফেলেছিলেন সাকলায়েনের চালাকি!
স্ত্রীকে নিয়ে আরও একটি মজার ঘটনা শোনালেন সাকলায়েন। ২০০১ সালের ঘটনা। পাকিস্তান দল তখন ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট খেলছে। ব্যাট করতে নামার আগে স্ত্রী সানা বললেন, যদি সত্যিই ভালোবাসে তবে সাকলায়েনকে হাফ সেঞ্চুরি করতেই হবে। আট নম্বরে নামা সাকলায়েন সত্যি ফিফটি করলেন! এরপর অবশ্য রান তোলা বেশ কষ্টই হচ্ছিল তাঁর জন্য। এমন সময় সানা আবার দাবি করে বসলেন, সাকলায়েনের ভালোবাসা যদি সত্যি হয়, তাহলে তাঁকে শতক হাঁকাতেই হবে। ব্যস, পিচ আঁকড়ে ব্যাট করতে থাকলেন সাকলায়েন। আশঙ্কা করছিলেন, সবচেয়ে বেশি সময় নিয়ে সেঞ্চুরির রেকর্ডটাই না করে বসেন! সম্রাট শাহজাহান প্রিয়তমা স্ত্রী মমতাজের জন্য গড়েছিলেন তাজমহল। আর সাকলায়েন কিনা প্রিয়তমা স্ত্রীর জন্য একটা সেঞ্চুরি হাঁকাতে পারবেন না?
ব্যক্তিগত ৯৮ রান নিয়ে দিন শেষ করলেন সাকলায়েন। পরদিন ব্যাটিংয়ে নেমে ৯৯ রানের মাথায় ৪০ মিনিট আটকে ছিলেন। পরে নাথান অ্যাস্টলের একটি বল লেগ সাইডে পাঠিয়ে শতক পূর্ণ করলেন। ২৯১ বল খেলে ৪৩০ মিনিট উইকেটে পড়ে থেকে সাকলায়েন খেলেছিলেন অপরাজিত ১০১ রানের দারুণ এক ইনিংস। আরও ওটাই ছিল ৪৯ টেস্টে ২০৮ উইকেট নেওয়া সাকলায়েনের সেরা ইনিংস! শুধু কিউই বোলার নয়, স্ত্রীর ছুড়ে দেওয়া ভালোবাসার অগ্নিপরীক্ষায় সেদিন ‘লেটার মার্কস’ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন সাকলায়েন! তথ্যসূত্র: ক্রিকইনফো।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.