‘অস্ত্র ব্যবহারে’ উসকানির অভিযোগ

a5b1b24a40844c1dcfa483b96494aa8f-Untitled-2মার্কিন নাগরিকদের আগ্নেয়াস্ত্র বহনের অধিকার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আবারও ক্ষোভের জন্ম দিলেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। অভিযোগ উঠেছে, তিনি তাঁর কথা ও মুখভঙ্গিতে সমর্থকদের প্রতি হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহারের অধিকার প্রয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য নিয়ে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে ডেমোক্রেটিক পার্টির সমর্থকদের মধ্যে।
গত মঙ্গলবার ট্রাম্প এসেছিলেন নর্থ ক্যারোলাইনায় এক নির্বাচনী সভায়। সেখানে আগ্নেয়াস্ত্র বহনের পক্ষে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি উল্লসিত সমর্থকদের বলেন, অস্ত্র বহনের যে অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের শাসনতন্ত্রের দ্বিতীয় সংশোধনীতে সংরক্ষিত আছে, হিলারি তা রদ করতে চান। এরপর তিনি লিখিত বক্তব্যের বাইরে গিয়ে মন্তব্য করেন, হিলারি প্রেসিডেন্ট হলে তিনি সুপ্রিম কোর্টে এমন সব বিচারপতি নিয়োগ দেবেন, যাঁরা এই সংশোধনীর বিরুদ্ধে। ট্রাম্প বলেন, ‘তখন তোমাদের আর কিছুই করার থাকবে না। তবে যারা দ্বিতীয় সংশোধনী সমর্থন করে, তারা যদি চায় তাহলে…, এই পর্যন্ত বলে তিনি এমন এক মুখভঙ্গি করেন, যার অর্থ হতে পারে, যাদের হাতে বন্দুক আছে, তারা যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারে।
ট্রাম্প কি এই কথা বলে হিলারিকে হত্যার করার পক্ষে তাঁর সমর্থকদের উসকানি দিয়েছেন? অনেকেই তা-ই মনে করছেন। মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) সাবেক প্রধান জেনারেল মাইকেল হেইডেন বলেছেন, এ কথার আর অন্য কোনো অর্থ হতে পারে না। ডেমোক্রেটিক সিনেটর মাইক মার্ফি বলেছেন, ট্রাম্প ঠাট্টা করে বা মুখ ফসকে এ কথা বলেছেন, এমন ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য নয়। উদারনৈতিক সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন বলেছেন, ট্রাম্প ভীরু, একজন নারীর কাছে হেরে যাচ্ছেন, সে কারণে এখন হত্যার হুমকি দিচ্ছেন।
ট্রাম্প নিজে অবশ্য এসব সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, তিনি তাঁর সমর্থকদের ভোটের মাধ্যমে হিলারিকে পরাস্ত করার কথাই বলেছেন।
বিতর্ক নিয়ে টালবাহানা: মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের একটি আবশ্যিক বৈশিষ্ট্য দুই প্রধান দলের প্রার্থীদের মধ্যে দর্শকের উপস্থিতিতে উন্মুক্ত বিতর্ক। ১৯৬০ সাল থেকে এই বিতর্ক নিয়মিত হয়ে আসছে। একটি দল নিরপেক্ষ কমিশনের তত্ত্বাবধানে ও প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের সম্মতিতে বিতর্কের সংখ্যা ও প্রকৃতি নির্ধারিত হয়ে থাকে। এ বছরেও কমিশন পূর্ব আলোচনার ভিত্তিতে তিনটি বিতর্কের তারিখ ও স্থান ঘোষণা করেছে। হিলারি ক্লিনটন প্রস্তাবিত বিতর্কে অংশগ্রহণে তাঁর সম্মতি দিয়েছেন। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি বিতর্কে খুবই আগ্রহী, তবে তাঁর কিছু শর্ত রয়েছে।
ঠিক কী শর্ত, সে কথা খোলাসা করে বলেননি ট্রাম্প। শুধু জানিয়েছেন, বিতর্ক যারা পরিচালনা করবে, তাদের নিরপেক্ষ হতে হবে। গত সপ্তাহে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, বিতর্কের ঘোষিত তারিখ ও সময়ে টিভিতে গুরুত্বপূর্ণ ফুটবল খেলা চলবে। ফুটবল লিগ কর্তৃপক্ষ তাঁকে আপত্তি জানিয়ে চিঠি লিখেছে। তিনি চান এই তারিখ বদলানো হক। ফুটবল লিগ অবশ্য এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, এ ধরনের কোনো চিঠি তারা ট্রাম্পকে লেখেনি। বিতর্ক কমিশনও জানিয়েছে, সবার সঙ্গে কথা বলার পরেই তারিখ নির্ধারিত হয়েছে।
বিতর্ক নিয়ে ট্রাম্পের এই টালবাহানা দেখে কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন হিলারির সঙ্গে সরাসরি বিতর্ক এড়াতেই তিনি নানা শর্ত আরোপের কথা বলছেন। অধিকাংশ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রশ্নে তাঁর জ্ঞান সীমিত, এ কথা তাঁর দলের অনেক নেতাই বলেছেন।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.