যুক্তরাষ্ট্র অফিস: মুখে দেশ প্রেম ও জাতীয়তাবাদের ঝান্ডা তুলে ধরার কথা বলে নিউইয়র্কের কোন কোন ব্যবসায়ী নেতা ভারতীয়ও পাকিস্তানী ট্রাভেল এজেন্সীগুলোর সাব এজেন্ট হিসাবে কাজ করে বাংলাদেশী ট্রাভেল ব্যবসার মৃত্যুঘন্টা বাঁজাতে নেপথ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। আর তাদেরকে এই কাজে সহায়তা করছেন নিউইয়র্কে এমিরেটস এয়ার লাইন্সের উচ্চ পদস্থ ভারতীয় ও পাকিস্তানী কর্মকর্তারা। নিজ দেশের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এমন মরণঘাতি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তা করছেন নিউইয়র্ক বাংলাদেশ বিমান অফিসের সাবেক এক কর্মচারী। এই ব্যক্তিটি প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশী ট্রাভেল ব্যবসাকে ধংসের পরিকল্পনা করে প্রথমে ‘টেবিল ট্রাভেল এজেন্সী’ গঠনে উৎসাহিত করে বাংলাদেশী অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটস, জ্যামাইকা, ব্রুকলীনে বিভিনড়ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে একটি টেবিলে একজনকে বসিয়ে যার সূচনা করেছিলেন তা এখন গ্রোসারী পর্যন্ত বিস্তৃত করেছেন। অবস্থা এমন দাড়িয়েছে যে একটি সুসজ্জিত অফিসে তিন চারজন কর্মচারী নিয়ে যে ট্রাভেল এজেন্সী এক সময় দেখা যেতো বাংলাদেশী কমিউনিটিতে তা এখন বিরল হয়ে যাচ্ছে।
কিভাবে বাংলাদেশী ট্রাভেল এজেন্সী ব্যবসাকে ধংস করা হচ্ছেচ্ছ তা খতিয়ে দেখতে গিয়ে জানা গেছে, বিশেষ করে এমিরেটস এয়ার লাইন্স এই কাজে সবচেয়ে সহযোগিতা করছে ভারতীয় স্টক হোল্ডারদের। বাংলাদেশী স্টক হোল্ডারদের চেয়ে বাংলাদেশ রুটে ভারতীয় স্টক হোল্ডারদের টিকিট প্রতি সরাসরি ৪০ থেকে ৬০ ডলার কম মূল্যে টিকিট দিচ্ছে এমিরেটস। আর বিমানের সেইসাবেক কর্মচারী নিউইয়র্কে এমন একটি ভারতীয় স্টকহোল্ডার প্রতিষ্টানে কাজ করে সেই প্রতিষ্ঠানের ব্যবসাকে বাড়াতে নীতিহীনভাবে বাংলাদেশী কমিউনিটিতে টেবিল ট্রাভেল এজেন্সী (টিটিএ) ও গ্রোসারী ট্র্যাভেল ব্যবসার প্রবর্তন করে সেই ৪০ থেকে ৬০ ডলার কম মূল্যে পাওয়া টিকিট এদেরকে দিয়ে বিμি করে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ করছেন, আর তার এই কর্মকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশী ট্রাভেল এজেন্সীগুলো।
এমিরেটস এয়ার লাইন্সের ভারতীয় কর্মকর্তাদের বাংলাদেশী ট্রাভেল এজেন্সীগুলোর প্রতি এই বিমাতাসূলভ আচরণের ঘটনাটি প্রকাশ হয়েছে গত সপ্তাহে জ্যাকসন হাইটসের একটি ট্রাভেল এজেন্সীর বিরুদ্ধে দুয়েক যাত্রীর অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গিয়ে। একজন যাত্রীরবাতিল হওয়া টিকিট বাতিল হয়নি প্রমাণ করার জন্য সেই ট্রাভেল এজেন্সী যে কাগজ পত্র দিয়েছিল তাদের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরে সে বিষয়ে এমিরেটস এয়ার লাইন্সের কাছে জানতে চাইলে তারা জানায় যে বাংলাদেশী সেই এজেন্সীটি তাদের কাছ থেকে নয়, একটি ভারতীয় মালিকানাধীন এজেন্সী থেকে টিকিট কেটেছিলো ঐ যাত্রীর জন্য। তাহলে কিভাবে বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানটি সাংবাদিকদের কাছে বিলি করা কাগজে এমিরেটসের দেয়া তথ্যে তাদের নাম বসালো জানতে চাইলে এমিরেটসের কর্মকর্তারা এবিষয়ে তাদের অজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, শুধু নিউইয়র্ক নয় পুরো আমেরিকায় একমাত্র ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ট্রাভেল’ ছাড়া আর কোন বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান এমিরেটস এয়ার লাইন্সের স্টকহোল্ডার না। আর তাই ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ট্রাভেল’ ছাড়া অন্য কোন বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান টিকিট সংক্রান্তও বিষয়ে এমিরেটসের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে না। স্টকহোল্ডার হতে হলে সেই ট্রাভেল এজেন্সীকে অবশ্যই এআরসি সদস্য হতে হয় বলে জানা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে একমাত্র বর্তমান সময়ে ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ট্রাভেল’ই এআরসি সদস্য বাংলাদেশী ট্রাভেল এজেন্সীগুলোর মধ্যে।
এদিকে বাংলাদেশী বাজার নিয়ে এমিরেটস এয়ার লাইন্সের নীতিহীন কার্যকলাপের নিন্দা জানিয়েছেন বাংরাদেশী ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশয়শন (জেবিবিএ-এনওয়াই)-এর সাধারণ সম্পাদক আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম বলেন, যারা বাংলাদেশী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভারতীয় ও পাকিস্তানী চক্রান্তের সাথে হাতমিলিয়ে কাজ করছে তারা শুধু কমিউিনিটির শত্রু নন, বাংলাদেশেরও শত্রু। দিদার আরো বলেন, এমন ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে তাদেরকে কমিউনিটিতে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা যায় কিনা তা ভেবে দেখা উচিৎ।
আরও খবর