দীর্ঘদিন ধরেই এলিয়েন বা ভিনগ্রহের কোনো প্রাণীর সন্ধান করছেন গবেষকেরা। এত বড় মহাবিশ্ব যেখানে কোটি কোটি ছায়াপথ, গ্রহ-নক্ষত্র, সেখানে এলিয়েন থাকতে পারে না? সম্প্রতি একদল গবেষক দাবি করেছেন, পৃথিবীই একমাত্র গ্রহ নয় যেখানে প্রাণের উদ্ভব ঘটেছে। পৃথিবীর বাইরেও এমন গ্রহ-নক্ষত্র আছে যেখানে প্রাণ তৈরির মৌলিক উপাদান জটিল জৈব অণুর অস্তিত্ব রয়েছে। সম্প্রতি তেমনি একটি নবীন নক্ষত্রের সন্ধান পাওয়া গেছে বলেও দাবি তাঁদের।
সম্প্রতি ইউরোপিয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরির আতাকামা লার্জ মিলিমিটার/সাব মিলিমিটার অ্যারে (এএলএমএ) টেলিস্কোপ ব্যবহার করে জীবনের মৌলিক এই উপাদান শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন গবেষকেরা। হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান সেন্টারের অ্যাস্ট্রোফিজিকসের গবেষক কারিন ওবার্গ তাঁদের এই আবিষ্কারের কথা জানিয়েছেন।পৃথিবী থেকে ৪৫৫ আলোকবর্ষ দূরে এমডব্লিউসি ৪৮০ নামের একটি নক্ষত্রের ধুলো মেঘে পাওয়া গেছে জটিল জৈব অণু।
পৃথিবী থেকে ৪৫৫ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত এই নক্ষত্রটির নাম এমডব্লিউসি ৪৮০। এর অবস্থান টাউরাস নক্ষত্রপুঞ্জে। এর আকার সূর্যেরও দ্বিগুণ। গবেষকেরা দাবি করেছেন, এই নক্ষত্রটির গ্যাসীয় মেঘে কার্বনের ও মিথাইল সায়ানাইডের কয়েক ধরনের অণু রয়েছে। সায়ানাইডের এই অণুগুলোকেই গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে কারণ এতে কার্বন-নাইট্রোজেনের বন্ধন থাকে যা অ্যামিনো অ্যাসিড তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষকেরা দাবি করেছেন, প্রথমবারের মতো তাঁরা কোনো নক্ষত্রের ধুলো মেঘের মধ্যে এ ধরনের যৌগের সন্ধান পেলেন। এতে নিশ্চিত হওয়া যায় যে অসংখ্য পৃথিবীসদৃশ গ্রহে এ ধরনের জটিল অণুর অস্তিত্ব রয়েছে। এই অণুগুলো প্রাণের উদ্ভবের জন্য মৌলিক উপাদান।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার বিজ্ঞানীরা ২০২৫ সালের মধ্যেই এলিয়েন খুঁজে বের করার প্রত্যয় জানিয়েছেন।
নাসার প্রধান বিজ্ঞানী অ্যালেন স্টোফান সম্প্রতি এক প্যানেল আলোচনায় বলেছেন, ‘আগামী এক দশকের মধ্যে এলিয়েনের খোঁজ পাওয়া যাবে, যা হবে পৃথিবীর মধ্যে সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার। আমি মনে করি, আমরা এক দশকের মধ্যেই পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনো খানে জীবনের অস্তিত্বের খোঁজ পেয়ে যাব। আমরা জানি, কোথায় তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে বা তাদের কীভাবে খুঁজতে হবে। আমাদের হাতে প্রযুক্তি রয়েছে আর আমরা তা প্রয়োগ করছি। আমি মনে করি আমরা ঠিক পথেই আছি।’