সোনা কিনতে টাকা লাগে। সেই টাকা কিভাবে ঢাকা থেকে পাঠানো হয় বিদেশে, এবার সে কথাই জানালেন এক মুদ্রাপাচারকারী। তার নাম আব্দুল কাদির লালন। মঙ্গলবার গভীর রাতে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে বিপুল পরিমাণ মুদ্রাপাচার করার সময় তাকে হাতে-নাতে ধরা হয়। এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের একটি চৌকস দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আগে থেকেই ওঁৎপেতে থাকায় ধরা পড়েন কাদির।
এএসপি তানজীনা আক্তার ইভা জানান- কাদির সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সিঙ্গাপুর যাবার জন্য বিমানবন্দরে আসেন। বহির্গামী ৩নং গেট দিয়ে তিনি যখন লাগেজ নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন, তখনই তাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। এ সময় লাগেজ খুলে দেখা যায়, বিপুল পরিমাণ দেশী-বিদেশী মুদ্রাÑ বাংলাদেশী মুদ্রায় ২ কোটি ১০ লাখ ৪৬ হাজার ৬শ’ টাকা। এগুলো রাখা ছিল একটা ট্রলি ব্যাগে, যা সরাসরি চেক ইন কাউন্টারে বুকিং করে দেয়া হতো। ওই ব্যাগের তলায় একাধিক স্তরে স্কচ ট্যাপ দিয়ে আটকিয়ে লুকিয়ে রাখা ছিল। এছাড়া কাদিরের জুতো ও শরীরের একাধিক স্থানেও মুদ্রা লুকানো ছিল। উদ্ধারকৃত মুদ্রার মধ্যে রয়েছে রিয়েল, ডলার, ইউরো, দিনার, দিরহাম ও বাংলাদেশী টাকা।
প্রশ্ন ওঠেছেÑ কিভাবে স্ক্যানার ফাঁকি দিয়ে কাদির মুদ্রার লাগেজ নিয়ে ভেতরে প্রবেশের সুযোগ পেল। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্ক্যানারে দেয়ার পর তাতে আপত্তিকর কিছুই নেই বলে ট্যাগ লাগানো হয়। তারপর এয়ারর্পোট আর্মড পুলিশের একজন নারী সদস্যের সন্দেহের উদ্রেক হয়। তিনি তাৎক্ষণিক তাকে আটকে দেন এবং চ্যালেঞ্জ করেন। এতে কাদির থতমত খেয়ে যান। তারপর তাকে নিয়ে যান এপিবিএন অফিসে। এখানে তার লাগেজ চেক করা হলে দেখা যায় তার নিচে একাধিক তিনটে স্তরে সাজানো লুকানো মুদ্রা।
এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কাদির স্ক্যানারে দায়িত্বরত সিভিল এ্যাভিয়েশন ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই লাগেজ নিয়ে নির্বিঘেœ পার হয়ে যান। তাকে কেউ কিছু বলেনি। যদি এপিবিএন না ধরতো তাহলে চেকইন কাউন্টারে বুকিং দিয়ে তিনি অনায়াসে পার পেয়ে যেতেন।
এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে তাকে থানায় সোপর্দ করা হয়।
থানা পুলিশ জানায়, কাদির এ সব মুদ্রা নিয়ে সিঙ্গাপুর যাচিছলেন, সোনা কিনে আনার জন্য। তিনি সোনা চোরাচালানী চক্রের সদস্য। তার বাড়ি নীলফামারির সৈয়দপুরে।