ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চান না ডোনাল্ড ট্রাম্প

ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চান না ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ুক এমনটা চান না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি তার জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টাদের এমন কথাই বলেছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের তিনজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে তেহরানের সঙ্গে যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান সম্পর্কে বলেছেন, ‘তিনি কোনো যুদ্ধ চান না। যারা ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চায় তিনি তাদের সঙ্গে নেই।’
ট্রাম্প প্রশাসনের ওই কর্মকর্তারা বলছেন, মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য এবং বাকি উপদেষ্টাদের সঙ্গে এ নিয়ে যোগাযোগ করেছেন ট্রাম্প। তিনি ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান উত্তেজনাকে সামরিক কোনো সংঘাত চান না বলে জানিয়েছেন।

তবে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে না চাইলেও ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেছেন, যদি ওই অঞ্চলে (মধ্যপ্রাচ্যে) তাদের স্বার্থ কোনোভানে ক্ষুন্ন হয় তাহলে তিনি তা রক্ষা করবেন। আর নিজেদেন রক্ষা করতে যা প্রয়োজন তাই করবেন।

সম্প্রতি ইরান যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়েছে। তেহরানঘনিষ্ঠ গোষ্ঠীগুলোর কর্মকাণ্ড মার্কিন গোয়েন্দাদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে। গোয়েন্দা সতর্কতার বরাতে, মধ্যপ্রাচ্যে রণতরী, বোমারু বিমান আর নতুন প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, তিনি আশা করেন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না। সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট উয়েলি মাউরের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের এমন কথা বলেন।

ওয়াশিংটন তেহরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আশা করছি হবে না।’ তাছাড়া হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে চায় না।’

এদিকে ইরানকে মোকাবিলায় সর্বক্ষণ ওয়াশিংটেনর পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। এছাড়া তারাও যুক্তরাষ্ট্রের মতো ইরানকে হুমকি মনে করছে। দুই দেশ সম্মিলিতভাবে ইরানকে ঠেকানোর বিষয়ে কাজ করবে বলে, রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির জেরে মধ্যপ্রাচ্যে ইতোমধ্যে অতিরিক্ত সামরিক সরঞ্জাম পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যার মধ্যে দুটি বিমানবাহী রণতরী পারস্য উপসাগরে, পাঁচটি বি-৫২ বোমারু বিমান কাতারে এবং নতুন প্রযুক্তির প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে।

ইরান হামলা করতে পারে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক উপস্থিতি বাড়ায় যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন ‘বিশ্বাসযোগ্য ও সুনিদিষ্ট’ গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে ইরানে সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর এমন ঘোষণা দেন।

এ ছাড়াও ইরানকে মোকাবিলায় মধ্যপ্রাচ্যে ১ লাখ ২০ হাজার সেনা মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে সেনা মোতায়েনের এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

ইরান অবশ্য বরাবরের মতো যুক্তরাষ্ট্রের এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ইরাকে মার্কিন অভিযানের সময় যেরকম ‘ভুয়া গোয়েন্দা তথ্য’ ছড়ানো হচ্ছিল ঠিক সেরকম করে যুক্তরাষ্ট্র গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে হামলার চক্রান্ত করছে বলে দাবি তেহরানের।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.