পাসপোর্ট ছাড়া বাংলাদেশ বিমানের পাইলট ইমিগ্রেশন পার হলেন কীভাবে?
পাসপোর্ট ছাড়া বাংলাদেশ বিমানের পাইলট ইমিগ্রেশন পার হলেন কীভাবে?
বৃহস্পতিবার বিমানের পাইলটের পাসপোর্ট ছাড়া কাতার গিয়ে আটক হওয়ার ঘটনায় শাহজালালের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়াটি সামনে এসেছে। যদিও বাংলাদেশের প্রধান এ বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে বহু আগেই প্রশ্ন উঠেছিল। এ কারণে যুক্তরাজ্য এক সময় শাহজালালে কার্গো ফ্লাইটও বন্ধ করে দেয়।
পাসপোর্ট ছাড়া খোদ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদ বিদেশ যাওয়ার ঘটনায় ফের আলোচনায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। আবারো বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও ইমিগ্রেশন চেক করার সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
নিয়ম অনুযায়ী পাইলটদের বিমানবন্দরে ত্যাগ ও প্রবেশের তথ্য জেনারেল ডিক্লেয়ারেশনের (জিডি) কপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পৃথিবীর সকল বিমানবন্দরেই একই নিয়ম অনুসরণ করা হয়। জিডির কপিতে পাইলটের নাম, ফ্লাইট নম্বর, কোন দেশে যাচ্ছেন, এসব তথ্যের পাশাপাশি পাসপোর্ট নম্বরসহ প্রয়োজনীয় তথ্য উল্লেখ থাকে। ইমিগ্রেশনে পাসপোর্ট দেখে জিডির কপিতে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে গমন করতে দেওয়া হয়।
কিন্তু বিমানের ওই পাইলট পাসপোর্ট ছাড়া কীভাবে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পেরিয়ে গেলেন, এটি অনুসন্ধান করতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মুহিবুল হক বলেন, পাসপোর্ট ছাড়া পাইলট কীভাবে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পার হলেন, সেটি খতিয়ে দেখা হবে।
এ ছাড়া বিষয়টি অনুসন্ধান করতে ইতিমধ্যে ইমিগ্রেশন পুলিশকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীদের কাতার থেকে দেশে আনতে গত বুধবার রাতে কাতারের দোহা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গমন করে রাষ্ট্রয়াত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট। বিমানের বোয়িং-৭৮৭ উড়োজাহাজের পাইলট ছিলেন ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদ। কাতারের দোহা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ট্রানজিট পয়েন্টে থাকা একটি হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়।
তিনি কাতারের ট্রানজিট পয়েন্ট পার হয়ে দেশটির ভেতরে প্রবেশ করতে গেলে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা তার পাসপোর্ট দেখতে চান। কিন্তু পাসপোর্ট দেখাতে না পারায় ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদকে বিমানবন্দরটির ইমিগ্রেশনের হেফাজতে নেওয়া হয়।
বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিনল্যান্ড সফরে রয়েছেন। ইউরোপের ওই দেশ থেকে অন্য একটি ফ্লাইটে দোহা ফিরে সেখান থেকে বিমানের ওই বিশেষ ফ্লাইটে শনিবার প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
বিমান সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার বিশেষ ফ্লাইটের দায়িত্ব থেকে ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার পরিবর্তে বিমানের অন্য একজন পাইলটকে পাঠোনো হয়েছে।
তবে ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে তার পাসপোর্ট বিশেষ ব্যবস্থায় রিজেন্ট এয়ারওয়েজে করে ইতিমধ্যে কাতার পাঠানো হয়েছে।