উত্তর কোরিয়ার একটি সাবমেরিন সাগরতলে অভিযান চলাকালে নিখোঁজ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ব মিডিয়া। গত শুক্রবার উত্তর কোরিয়া এবং দক্ষিণ কোরীয় সীমান্তবর্তী অঞ্চলে মার্কিন বাহিনী সমরাস্ত্র মহরা দেবার একদিন পরেই শনিবার সাবমেরিন নিখোঁজ হওয়ার ঘোষণা দিলো উত্তর কোরিয়া। উত্তর কোরীয় মিডিয়া মারফত বলা হচ্ছে, সাবমেরিনটি প্রায় এক সপ্তাহ ধরে উত্তর কোরিয় উপকূলে সীমান্ত রক্ষায় চলাচল করছিল।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এএফপি’কে জানায়, তারা উত্তর কোরিয়ার সাবমেরিন নিখোঁজের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে এবিষয়ে অন্য কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার এবিষয়ে মন্তব্য না করলেও সিএনএন সূত্র মারফত মার্কিন তথ্যে জানা যায়, মার্কিন বাহিনী উত্তর কোরীয় ওই সাবমেরিনটির উপর শুরু থেকেই নজর রাখছিল। দুই কোরিয়ার মধ্যবর্তী অবস্থানে থাকা মার্কিন ঘাটি থেকে সাবমেরিন নিখোঁজ হওয়ার কারণ হিসেবে পানিতে ডুবে যাওয়াকে দায়ি করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে ন্যাভাল ইন্সটিটিউট(ইউএসএনআই) নিউজ জানায়, খুব সম্ভবত সাবমেরিনটি পানিতে ডুবে যেতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এই বক্তব্য প্রকাশ করে ইউএসএনআই। যদিও এখন পর্যন্ত উত্তর কোরিয়া নিজেদের সাবমেরিন নিখোঁজের ব্যাপারে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। সাবমেরিনটিতে কোনো সমস্যা বা ঠিক কোন কারণে এটা নিখোঁজ হতে পারে তা এখনও উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়নি এবং কোনো দেশকে দোষারোপও করা হয়নি। তবে, সাবমেরিন নিখোঁজের ঘটনায় মাত্রাতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় আছে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র।
যদিও বার্তাসংস্থা ইনোপের মতে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সাবমেরিন নিখোঁজের ঘটনায় উত্তর কোরিয়াকে প্রোপাগান্ডা না ছড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে। কারণ সামগ্রিক ভূ-রাজনৈতিক বর্তমান অবস্থান প্রেক্ষাপটে যেকোনো প্রোপাগান্ডা যুদ্ধ পরিস্থিতি ডেকে আনতে পারে বলেও তারা মনে করছেন।
উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়ার নৌবাহিনীর কাছে মোট ৭০টি সাবমেরিন রয়েছে। এই সাবমেরিনগুলোর অধিকাংশ ডিজেলচালিত এবং উপকূলের অধিকাংশ এলাকা জুরে অভিযান পরিচালনা করতে সক্ষম নয়। কিন্তু এই পুরাতন সাবমেরিনগুলোই দক্ষিণ কোরিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলগুলোর জন্য ভয়ানক হুমকি হিসেবে দাড়িয়ে আছে। কারণ ২০১০ সালেও উত্তর কোরিয়ার সাবমেরিন থেকে ছোড়া এক টর্পেডোর আঘাতে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি জাহাজ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।