বাংলাদেশের জন্য তৈরি হও অস্ট্রেলিয়া, বললেন শেন ওয়ার্ন

বাংলাদেশের জন্য তৈরি হও অস্ট্রেলিয়া, বললেন শেন ওয়ার্ন।

বিশ্বকাপ, বিশ্বকাপ, বিশ্বকাপ—ক্রিকেট বিশ্বে কান পাতলে এখন এই একটি শব্দই চারদিকে শোনা যাচ্ছে। ভারত, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া…সব দলের অধিনায়কের কণ্ঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে কথাবার্তা। অস্ট্রেলিয়ায় যেটি হবে আগামী বছর অক্টোবরে। কদিন আগে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি বলেছেন, দলের মূল ভাবনা এখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য নিজেদের গুছিয়ে নেওয়া। পাকিস্তান তো সেই লক্ষ্যে নেতৃত্বেই পরিবর্তন এনেছে। অস্ট্রেলিয়ার সীমিত ওভারের অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চও গতকাল কথা বলেছেন একই সুরে। অ্যাডিলেডে আগামীকাল শুরু তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিয়ে ফিঞ্চের কথা, ‘দলে এখন যে ১৪ জন আছে, তাদের নিয়েই সামনে এগিয়ে যেতে চাই। বিশেষ করে (টি-টোয়েন্টি) বিশ্বকাপের আগে আগামী ১২ মাস। আমরা টুর্নামেন্টটির আগে ১৪ থেকে ১৬ জন খেলোয়াড়ের একটা ভিত্তি গড়তে চাই।’

কিন্তু এমন তো নয় যে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়া কোনো টেস্ট ম্যাচ খেলবে না! আগামী বছরের জুনেই তো টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে দুটি ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশে আসবেন স্মিথ-ওয়ার্নাররা। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক লেগস্পিনার শেন ওয়ার্ন মনে করিয়ে দিয়েছেন সেটিও। শুধু কি মনে করিয়ে দেওয়া, জাস্টিন ল্যাঙ্গারের দলকে একটি সতর্কবার্তাই দিয়ে রেখেছেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার—বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের আগে স্পিন আক্রমণের শক্তি বাড়াও!

বাংলাদেশ সফরে অস্ট্রেলিয়াকে স্পিন-সহায়ক উইকেটেই খেলতে হবে বলে মনে করেন ওয়ার্ন। আর এখানে ভালো করতে হলে পেস নয়, কাজে লাগবে স্পিন আক্রমণই। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া দলে এই মুহূর্তে স্পিন আক্রমণ একজন বোলারসর্বস্ব! ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ অ্যাশেজ সিরিজে একমাত্র স্পিনার হিসেবে নাথান লায়নকে খেলিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচকেরা। কোনো কারণে বাংলাদেশ সফরের আগে লায়ন চোটে পড়লে কী হবে—এমন প্রশ্নই তুলেছেন ওয়ার্ন।

অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটকে তাই টেস্ট ক্রিকেটের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি একটি পরামর্শ দিয়ে রেখেছেন, ‘লায়নের যদি কিছু হয়, তাহলে দলের জন্য সেটা বড় বিপদই হবে। এই গ্রীষ্মে অস্ট্রেলিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে লায়নের কিছু হলে কেউ একজন যেন তার দায়িত্ব নিতে পারে, এমন কাউকে তৈরি করা। আমি জানি না সেটা কে হবে।’ লায়নের সঙ্গে এর আগে স্পিন বোলিংয়ে বিভিন্ন সময়ে জুটি বেঁধেছেন অ্যাস্টন অ্যাগার ও অ্যাডাম জাম্পা। এ ছাড়া আছেন বাঁহাতি স্পিনার জন হল্যান্ড আর লেগস্পিনার মিচেল সোয়েপসনও। যাঁরা লায়নের অবর্তমানে কাঁধে তুলে নিতে পারেন অস্ট্রেলিয়ার স্পিন আক্রমণের দায়িত্ব।

বাংলাদেশ সফরে অস্ট্রেলিয়ার স্পিন আক্রমণে নাথান লায়নের একজন সঙ্গী চাইছেন ওয়ার্ন। কোনো কারণে বাংলাদেশ সফরের আগে লায়ন চোটে পড়লে কী হবে—সে প্রশ্নও তুলেছেন অস্ট্রেলিয়ার এই স্পিন কিংবদন্তি

তবে অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে এবারের শেফিল্ড শিল্ডের প্রথম দুই ম্যাচে প্রাদেশিক দলগুলোর অধিনায়কেরা স্পিনার খুব একটা খেলাননি। এমনকি প্রথম দুই ম্যাচের একটিতেও খেলা হয়নি অ্যাগার, সোয়েপসন, জাম্পার। অথচ গত গ্রীষ্মে কুইন্সল্যান্ডের হয়ে শেফিল্ড শিল্ডে ২৮ গড়ে ২৬টি উইকেট নিয়েছেন হল্যান্ড। সোয়েপসন নিয়েছেন ৩৮ গড়ে ২৪ উইকেট। লায়নের সঙ্গে অ্যাগারও ২০১৭ সালের বাংলাদেশ সফরে দলে ছিলেন। ১-১-এ ড্র হওয়া সিরিজে দুজনে মিলে দুই টেস্টে নিয়েছেন বাংলাদেশের ২৯ উইকেট। লায়ন ১৪.৩২ গড়ে নিয়েছেন ২২ উইকেট, ২৩.১৪ গড়ে ৭ উইকেট অ্যাগারের। অস্ট্রেলিয়ার ফাস্ট বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেট ছিল প্যাট কামিন্সের, ২৯ গড়ে ৬টি।

বাংলাদেশ সফরে স্পিনারদের তৈরি রাখার জন্য শেফিল্ড শিল্ডের দলগুলোকে পরামর্শ দিয়েছেন ওয়ার্ন, ‘অবশ্যই প্রতিটি ম্যাচে অন্তত একজন স্পিনার খেলানো উচিত। শুধু প্রথম ইনিংসের কথা মাথায় রেখে আপনি দল নির্বাচন করতে পারেন না। বড় দৈর্ঘ্যের ম্যাচে একটি দ্বিতীয় ইনিংসও থাকে। কন্ডিশন যেমনই হোক, দলগুলোর অধিনায়কদের একাদশে স্পিনার না রাখাটা হতাশার। শেফিল্ড শিল্ডের দলগুলোকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার তৈরি করতে হবে। শুধু প্রাদেশিক দল নিয়ে ভাবলে চলবে না।’

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.