ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কৃতজ্ঞতা জানাতে যা করলো হংকংয়ের বিক্ষোভকারীরা
ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কৃতজ্ঞতা জানাতে যা করলো হংকংয়ের বিক্ষোভকারীরা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কৃতজ্ঞতা জানালো হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীরা। আজ সোমবার হংকংয়ে অবস্থিত মার্কিন কনস্যুলেটের সামনে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা, প্ল্যাকার্ড নিয়ে জমায়েত হন বিক্ষোভকারীরা। এসময় ট্রাম্প লেখা টি-শার্ট আর টুপি পরিহিত অবস্থায় দেখা যায় তাদের।
টানা পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা সরকারবিরোধী বিক্ষোভে তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান হংকংয়ের গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীরা। গত সপ্তাহে মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে ‘হংকং মানবাধিকার ও গণতন্ত্র আইন’ নামে একটি আইনে ট্রাম্প স্বাক্ষর করায় বিক্ষোভকারীদের এই কৃতজ্ঞতা।
বিলটি পাস হওয়ার পর ট্রাম্প প্রশাসন চাইলে হংকং ও বেইজিংয়ের পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের (যাদের বিরুদ্ধে হংকংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠছে) বিরুদ্ধে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারবে। অবশ্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এর আগেও অনেকবার টুইট বার্তায় হংকংয়ের বিক্ষোভ-আন্দোলনকে সমর্থন করেছেন।
হংকংয়ের সাধারণ মানুষের অধিকার যেনো লঙ্ঘিত না হয় সে বিষয়ে বেইজিংকে হুঁশিয়ারি দিয়েও রেখেছেন তিনি। চীন অবশ্য আইনটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তীব্র ক্ষোভ আর নিন্দা জানিয়েছে। তারপরই হংকংয়ের বিক্ষোভকারী ট্রাম্পের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা জানাতে জমায়েত হলেন মার্কিন কনস্যুলেটের সামনে।
মার্কিন কনস্যুলেটের সামনে যেসব বিক্ষোভকারী জমায়েত হয়েছিলেন তাদের মধ্যে কেউ কেউ ব্যানারে লিখেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, দয়া করে হংকংকে স্বাধীন করুন।’ মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে হাতে মাইক্রোফোনে অনেককে বলতে শোনা গেছে, ‘হংকংকে দেয়া এতবড় একটা উপহারের জন্য ধন্যবাদ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।’
হংকংয়ের বিক্ষোভকারীরা আজও তিনটি বিশাল মিছিল বের করে। প্রথমে মিছিলগুলো শান্তিপূর্ণ থাকলেও পরে তা অশান্ত হয়ে ওঠে। কোথাও কোথাও মেট্রো স্টেশন অবরুদ্ধ কোথাও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গুরুতর চোট পেয়ে আহত হয়ে হাসপাতালে একজন ভর্তি হয়েছেন।
কংগ্রেসের দুই কক্ষে সর্বসম্মতভাবে ‘হংকং হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্র্যাসি’ নামের বিলটি পাস হয়। আইন অনুযায়ী, চীনের অংশ হলেও হংকংয়ের নিজস্ব আইন ও অর্থনৈতিক নিয়ম আছে। বার্ষিক পর্যালোচনায় যাচাই করা হবে যে হংকংয়ের আইনকে খর্ব করে চীন সেখানকার বেসামরিক স্বাধীনতা এবং আইনের শাসন ক্ষুন্ন করছে কিনা।
হংকং এর মাধ্যমে বিশেষ বাণিজ্য সুবিধা বা মর্যাদা পাবে। বিশেষ বাণিজ্য মর্যাদা বজায় রাখতে হংকং যাতে যথেষ্ট স্বায়ত্তশাসন উপভোগ করতে পারে তা নিশ্চিতে হংকংয়ের পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবে যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষ বাণিজ্য মর্যাদা বলতে বোঝাচ্ছে, চীনের ওপর আরোপিত মার্কিন কোনো নিষেধাজ্ঞা হংকংয়ের জন্য কার্যকর হবে না।
এছাড়া ওই আইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে চীনের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাও আরোপ হতে পারে। উল্লিখিত বিলটি ছাড়াও মার্কিন সিনেটে আরও একটি বিল পাস হয়। বিলটি পাসের মাধ্যমে হংকংয়ের পুলিশের কাছে জনবিক্ষোভ দমনে ব্যবহৃত কাঁদানে গ্যাস, পিপার স্প্রে, রাবার বুলেট ও স্ট্যান গান রফতানি নিষিদ্ধ করা হয়।