যুক্তরাষ্ট্রে ইসলামভীতি এমন পর্যায়ে গেছে যে, অংকের সমীকরণ দেখেও আঁতকে উঠছে মানুষ! একজন অধ্যাপকের জটিল অংকের সমীকরণ দেখে এক যাত্রী ভয় পেয়ে কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর বিষয়টি নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লো আর সেকারণে ফ্লাইট দেরিতে ছাড়লো।
যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়া অঙ্গরাজ্য থেকে কানাডার অন্টারিওর উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তে একটি বিমানে এমন কাণ্ড ঘটেছে। পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক গুইদো মেনজিও যাচ্ছিলেন অন্টারিওতে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচার দিতে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৫ মে, বৃহস্পতিবার।
ইতালীয় অর্থনীতিবিদ মেনজিও জানিয়েছেন, তার করা অংকের সমীকরণ দেখে পাশের যাত্রীর মনে হয়েছিল ওটা কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নকশা। আর এ কারণেই তার ফ্লাইট ছাড়তে দেরি হয়।
মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টের কাছে এই অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন অধ্যাপক গুইদো মেনজিও।
অন্টারিও যাওয়ারর পথে আমেরিকান এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে ওঠেন মেনজিও। কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেয়ার কথা ছিল তার। আর সেকারণে প্রস্তুতি হিসেবে বিমানে বসেই ব্যতিক্রমী এক সমীকরণের সমাধান করছিলেন। কিন্তু বিমানের এক সহযাত্রী সে সমীকরণকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নকশা আর মেনজিওকে সন্ত্রাসী মনে করেন। এই নিয়ে হইচই শুরু হয়। এর জের ধরেই ফ্লাইটটি দেরিতে ছাড়ে।
আমেরিকান এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ এই ঘটনা স্বীকার করেছে। মেনজিও তার ফেসবুক পাতাতেও ওই অভিজ্ঞতার কথা লিখে এটিকে ‘অবিশ্বাস্য’ এক ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘নারীটি আমার পাশে বসলেন, আমাকে লিখতে দেখলেন এরপর কেবিন ক্রু এর কাছে একটি নোট পাঠালেন। নোটে বললেন, তিনি অসুস্থ বোধ করছেন কিন্তু আমাকে যে সন্ত্রাসী মনে হচ্ছে সেটিও তিনি বলেছেন।’
মেনজিও আরও লিখেছেন, ‘এটি একদিকে যেমন হাস্যকর ঘটনা তেমনি এটা আসলে উদ্বেগেরও। মানুষের সন্দেহজনক গতিবিধি দিনে দিনে সমস্যা তৈরি করছে। বিশেষ করে বিদেশিদের নিয়ে মানুষের মনের আতঙ্ক বাড়ছে- এটা উদ্বেগের বিষয।’
আমেরিকান এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীর ভালোমন্দ দেখা তাদের দায়িত্ব। আর এ কারণেই অধ্যাপককে জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই নারীর সন্দেহ ভুল প্রমাণিত হয়েছে। তবে ওই নারী যাত্রীর জন্য পরবর্তী ফ্লাইট বুক করা হয়।