হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারী একাধিক চক্র সক্রিয়। আইন প্রয়োগে অস্বচ্ছতা ও অদক্ষতা ছাড়াও ভুক্তভোগীদের দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে তৎপর সিন্ডিকেটের সদস্যরা।
সম্প্রতি সাগরপথে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজরদারি বাড়ায় আন্তঃদেশীয় মানবপাচারকারী সিন্ডিকেট আকাশপথকে নিরাপদ রুট হিসেবে বেছে নিয়েছে। পাসপোর্টে জাল ভিসা লাগিয়ে বিমানবন্দরে সংশ্লিষ্ট বিমানের বোর্ডিং ও ইমিগ্রেশন পুলিশের একশ্রেণির সদস্যদের সঙ্গে যোগসাজশে মানবপাচার করা হচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পাঠানো এক বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী ও তাদের এজেন্টদের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে দুটি প্রতিবেদনের মাধ্যমে ৮৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিষিদ্ধ করে তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের অগ্রগতি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) নির্দেশ দেয় ।
শাহজালাল বিমানবন্দরে সক্রিয় এ মানবপাচারকারী ও তাদের এজেন্টদের কার্যক্রম প্রসঙ্গে ২০১৯ সালের ১৮ জুন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে মানবপাচারে অভিযুক্তদের নামসহ একটি বিশেষ প্রতিবেদন পাঠায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে।
এ প্রতিবেদনের আলোকে ওই বছরের ১১ জুলাই মন্ত্রণালয় অভিযুক্ত ৮৬ জনের অনুকূলে বিমানবন্দরে প্রবেশের নিরাপত্তা পাস ইস্যু থাকলে তা বাতিল করতে বলে। এ ছাড়া তাদের বিমানবন্দরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে বেবিচককে নির্দেশ দেওয়া হয়।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও মন্ত্রণালয়ের সেই নিষেধাজ্ঞা এখনো বাস্তবায়ন করেনি বেবিচক কর্তৃপক্ষ।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিশেষ প্রতিবেদনে শাহজালাল বিমানবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কিছু প্রতিষ্ঠানকে মানবপাচারকারী চক্রের সহযোগী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এ চক্রে তালিকাভুক্ত করা হয় ৮৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে। তাদের মধ্যে রয়েছে সিভিল এভিয়েশনের ২৮, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ৯, ইমিগ্রেশন পুলিশের (এভসেক) ৯ কর্মকর্তা-কর্মচারী।
রয়েছেন বেসরকারি বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের ১১ সদস্য। এ ছাড়াও এই চক্রে রয়েছে ৯ ট্রাভেলস এজেন্সিসহ বহিরাগত ৯ দালাল। মানবপাচারের এ সিন্ডিকেটে রয়েছে পুরানা পল্টন, মতিঝিল ও সিলেটের ৯ ট্রাভেল এজেন্সি।
সুত্রঃ আমাদের সময়