ধর্ষকরাও ব্যবহার করছেন সাইট, আর বিষয়টি জানানো হয়নি সাইটের সদস্যদের- এই অভিযোগে একটি মডেলিং ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে করা এক মামলা নতুন করে উঠিয়েছে মার্কিন আদালত।
মডেল মেইহেম নামের ওই সাইটের পরিচালনা প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেট ব্র্যান্ডস-এর বিরুদ্ধে করা ওই মামলা ২০১৪ সালে নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছে বিবিসি। কিন্তু ফেডারেল আপিল বিভাগের এক আদালত এই মামলার এই রায় আবার ঘুরিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
একজন মডেল এই মামলা করেছিলেন। তার দাবি, এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যোগাযোগ হওয়া এক ব্যাক্তি তাকে ওষুধজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে ধর্ষণ করেছিল। আদালতে জমা দেওয়া দলিলে তিনি নিজেকে মডেল মেইহেম-এ প্রোফাইল থাকা জেইন ডো নামের একজন মডেল হিসেবে পরিচয় দেন।
তার অভিযোগ, ২০১১ সালে তার সঙ্গে ওই ব্যাক্তি যোগাযোগ করেন এবং একটি ‘কাস্টিং সেশন’-এর জন্য ডাকা হয়। কাস্টিং সেশন হচ্ছে কোনো মডেল বা অভিনেত্রীকে সম্ভাব্য কাজের জন্য ইন্টারভিউ নেওয়া। কিন্তু এটি একটি প্রতারণা ছিল, তাকে ওষুধ খাওয়ানো হয়, এবং দুজন লোক ক্যামেরার সামনে তাকে ধর্ষণ করেন।
কিছু লোক নারীদের এভাবে চিহ্নিত করার লক্ষ্যে মডেল মেইহেম ব্যবহার করতেন, এই বিষয়টি ইন্টারনেট ব্র্যান্ডস জানত কিন্তু তারা সদস্যদের জানাতে ব্যর্থ হয়, দাবি তার। এ জন্য ক্যালিফোর্নিয়া আইন অনুযায়ী তারা অবহেলার জন্য দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
২০১২ সালে এমন ঘটনায় দুজনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস কমিউনিকেশনস ডিসেন্সি অ্যাক্ট (সিডিএ) নামের আইনে বলা আছে, কোনো ওয়েবসাইট কর্তৃপক্ষ তাদের সাইটে ব্যবহারকারীদের পোস্ট করা কনটেন্টের জন্য দায়ী হতে পারে না। এর উপর ভিত্তি করে এই মামলা নিষ্পত্তির জন্য নথি জমা দেয় ইন্টারনেট ব্র্যান্ডস। সে সময় ইবে আর ফেইসবুক আদালতে জানায়, এই মামলা ইন্টারনেটের উপর একটি “শীতল প্রভাব” রাখতে পারে।
২০১৪ সালে আদালত মামলাটি নিষ্পত্তি করে দেয়।
কিন্তু মডেল মেইহেম-এ কী পোস্ট করা হয়েছিল, তা নিয়ে কোনো উদ্বেগ না থাকায়, মামলাটি আবার চালু করে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ফেডারেল আপিল আদালত।
আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়, “জেইন ডো এমন কোনো দাবি করেননি যে, ইন্টারনেট ব্র্যান্ডস-এর কোনো পোস্ট দ্বারা তিনি প্রতারিত হয়েছেন। ইন্টারনেট ব্র্যান্ডসও তাদের ওয়েবসাইটে কোনো পোস্ট পর্যবেক্ষণ করে অপরাধীকে ধরতে অভিযুক্ত নয়। বরং মডেল মেইহেম-এর মাধ্যমে কীভাবে তৃতীয় পক্ষরা লক্ষ্য করে প্রতারণা করছেন তা নিয়ে বাইরের উৎস থেকে পাওয়া তথ্য দিয়ে তাকে সতর্ক করতে ব্যর্থ হওয়ায় জেইন ডো ইন্টারনেট ব্র্যান্ডস দায়ী করার চেষ্টা করছেন। ইন্টারনেট ব্র্যান্ডস মডেল মেইহেম ব্যবহারকারীদের একটি সতর্কবার্তা দিতে পারত, শুধু ওয়েবসাইটে একটি ঘোষণা দিয়ে বা তারা যেসব কার্যক্রম সম্পর্কে জানতেন তা নিয়ে ব্যবহারকারীদেরকে মেইল করতে পারত।”
এই মামলা সামনে কোন দিকে যাবে, তা সামনে আদালতের উপরই নির্ভর করবে।