এতো খারাপ আচরণ না দেখলে বিশ্বাসই হতো না! [ভিডিও]

বিমান আমাদের, আমাদের সম্পদ দেশের সম্পদ, কোনো সচেতন নাগরিক চাইবে না নিজ দেশের সম্পদ ছেড়ে অন্য দেশের সম্পদ ব্যবহার করতে। তাই আমরা চেষ্টা করি বিমানসহ সব সময় বাংলাদেশি ব্র্যান্ডের গার্মেন্টস সামগ্রী থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব ধরনের জিনিস ব্যবহার করতে। দেশের জন্য, দেশের নামের জন্য। আর তখন যদি দেশের মানুষের হাতেই আমাদের লাঞ্ছিত হতে হয় তখন কীই বা করার থাকে আমাদের!

সৌদি আরবে বিমান বাংলাদেশের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়ম নিয়ে এমনই অনুভূতি দেশটিতে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের।

বাংলাদেশের ট্রেনের মতো সৌদিতে বিমানের টিকিট কিনতে গেলে বিমানের কর্মকর্তারা প্রায়ই বলেন, সিট খালি নেই। বিমান লস দিচ্ছে, এই কথাও শুনিয়ে দেন তারা। বিশেষ বিশেষ দিনগুলোতে তো বিমানের সিট মানে সোনার হরিণ!

তাহলে কি বিমানের টিকিটের চাহিদা এতোই বেশি যে কখনোই সিট খালি থাকে না? এ ব্যাপারে ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক মোহাম্মদ আল আমিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বিমানের টিকিটের চাহিদা রয়েছে বেশ ভালো। তবে কখনোই টিকিট পাওয়া যায় না এমন নয়। তারপরও নিজের দেশের সম্পদ বলে আমরা যাত্রীদের বুঝিয়ে বিমানের টিকিট কেনার পরামর্শ দিয়ে থাকি। তবে বিমান বাংলাদেশে গিয়ে ফেরত আসার পর তাদের কাছ থেকে আমাদের শুনতে হয় নানা ভোগান্তির কথা।

ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসায়ী আল আমিন
ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসায়ী আল আমিন

আল আমিন আরো বলেন, বিমান আগের থেকে অনেক পরিবর্তন এনেছে। তবে বিশেষ বিশেষ কিছু জায়গাতে পরিবর্তন আসেনি আর যা খুব শিগগিরই দরকার।

যেমন যাত্রীসেবা, কর্মকর্তা কর্মচারীদের আচার ব্যবহার, শিডিউল ইত্যাদি। বিমানের শিডিউল নিয়ে যাত্রীরা খুব অসন্তুষ্ট বলেও জানান আল আমিন।

শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে যাত্রীদের কী ধরনের সমস্যা হচ্ছে তা তুলে ধরেন কাছে হারুনুর রসীদ নামে এক যাত্রী। তিনি বলেন, তার মা খুব অসুস্থ, মাকে দেখতে মায়ের শেষ ইচ্ছেতে তিনি দেশে যাচ্ছেন। এমনি অবস্থায় বিমান ডিলে হয়েছে। এখন মায়ের সাথে তার শেষ দেখা হবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে আছেন।

হারুনের মতো এমন অসংখ্য যাত্রী আছেন যারা কোনো না কোনো সমস্যা নিয়ে দেশে যাচ্ছেন। সময় মতো দেশে ফিরতে না পেরে বড় ধরনের ক্ষতিও হচ্ছে অনেকের।

ঈদের পর দেশে পাঠানোর উদ্দেশ্যে রিয়াদ এয়ারপোর্টে পরিবারকে বিমানে তুলে দিতে গিয়ে অনিয়ম এবং যাত্রীদের সঙ্গে হয়রানিমূলক আচরণ করার প্রত্যক্ষদর্শী হয়েছিলেন রিয়াদ জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুল কাইয়ুম।

যাত্রীদের সঙ্গে কেন এমন আচরণ করা হচ্ছে জানতে চাইলে তার সাথেও খারাপ আচরণ করা হয়। এমনকি কারো কাছে জবাদিহি করতে ইচ্ছুক না বলেও জানান কর্মচারী (ট্রলি বয়)। পরে আবদুল কাইয়ুম কাউন্টার ম্যানেজারের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলেও সম্ভব হয়নি। এক পর্যায়ে তিনি তার ফেসবুকে বিমানের অনিয়ম এবং যাত্রীদের হয়রানি নিয়ে একটা স্ট্যাটাস দেন। আর এ ব্যাপারটি তিনি রিয়াদ জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের অন্য সদস্যদের সাথে নিয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহকে অবহিত করেন।

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবদুল কাইয়ুম
স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবদুল কাইয়ুম

আবদুল কাইয়ুম বলেন, আগের সরকারে আমলের চাইতে বর্তমানে বিমানের অবস্থান অনেক ভালো, দুর্নীতি অনেক কমে এসেছে। বিমান যাত্রীদের আরো ভালো সেবা, সব ধরনের সুবিধা দেয়ার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করছে। তবে কিছু লোভী কর্মচারীর জন্য বিমানের বদনাম থেকেই যাচ্ছে। যতোই ভালো কিছু করুক তাদের কারণে তা আর প্রকাশ হচ্ছে না। তারা যেভাবে যাত্রীদের সাথে খারাপ আচরণ করে সেটি আমি আমার নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতে পারতাম না!

তিনি বলেন, এ ধরনের ধারাবাহিক রিপোর্ট করলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস সরকার এমন একটি ব্যবস্থা নেবে যাতে দালাল কিংবা অসৎ লোকের বিমানে কোনো জায়গা না থাকে। যাত্রীরা যেন বিমানের উপর আস্থা রাখতে পারে।

এদিকে, রিয়াদস্থ বিমান অফিসে কর্মরত বিমানের ম্যানেজারকে এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে মুঠোফোন থেকে কল দেয়া হলে তিনি গণমাধ্যমে এ ব্যাপারে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। মিডিয়াকে বিমান সম্পর্কে কোনো প্রকার বক্তব্য দেয়া নিষেধ আছে বলেও জানান তিনি। বরং ঢাকা বিমানের অ্যাডমিন প্যানেলে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।

https://www.youtube.com/watch?feature=player_embedded&v=LZwy3GP3kd0

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.

EN