টাইটানের কী ঘটেছে বুঝতে পেরেছিলেন ‘টাইটানিক’ নির্মাতা

মানুষের মনে কত ধরনের কৌতূহল থাকে। রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার নেশা জাগে কারো কারো। সেই নেশা কাটাতেই কেউ আবার যাত্রা করেন অসম্ভবকে জয় করার মিশনে। তেমনই এক রোমাঞ্চকর যাত্রার সাক্ষী হতে চেয়েছিলেন পাঁচ ব্যক্তি। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, এ যাত্রা যে তাদের আর ফেরাবে না তখন কে জানত!

হ্যাঁ, বলা হচ্ছে আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে পড়ে থাকা টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া পাঁচ আরোহীর কথা। গত রোববার (১৮ জুন) তারা ছোট আকৃতির ডুবোযান টাইটানে করে সমুদ্রে ডুব দেয়। এর ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পরই এটির সঙ্গে উপরে থাকা জাহাজের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপরই শুরু হয় উদ্ধার অভিযান।

 

এবার বিষয়টি নিয়ে কথা বললেন বিখ্যাত হলিউড সিনেমা ‘টাইটানিক’-এর পরিচালক জেমস ক্যামেরন। জানান, আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে ‘টাইটান’ নিখোঁজের খবর জানার পরই তিনি সাবমেরিনটির পরিণতি বুঝতে পেরেছিলেন।

বিবিসিকে ক্যামেরন বলেন, ‘কী ঘটেছে, তা আমি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। সাবমেরিনটির ইলেকট্রনিক ব্যবস্থা, যোগাযোগব্যবস্থা ও ট্র্যাকিং ট্রান্সপন্ডার একই সঙ্গে নিষ্ক্রিয় হয়েছে। এই তথ্য জেনে তৎক্ষণাৎ বুঝতে পেরেছি, সাবমেরিনটি শেষ। কেননা, একটি চরম বিপর্যয়মূলক ঘটনা ছাড়া এগুলো একত্রে নিষ্ক্রিয় হতে পারে না।’

ক্যামেরন জানান, গত রোববার টাইটান যখন নিখোঁজ হয়, তখন তিনি একটি জাহাজে ছিলেন। সোমবার পর্যন্ত তিনি টাইটানের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে কিছুই জানতেন না।

ঘটনাটি জানার পর ক্যামেরনের মাথায় প্রথমেই যে বিষয়টি এসেছিল, তা হলো—বিস্ফোরণ। এই নির্মাতার কথার সঙ্গে মিলে যায় যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মুগের কথা।

গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষের কাছেই অপর একটি ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পান। সেখানে ডুবোযান টাইটানের পাঁচটি বড় অংশ পাওয়া যায়। আর এসব অংশ দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে, পানির নিচে যাওয়ার পর এতে বিস্ফোরণ হয়েছিল।

১৯১২ সালে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে টাইটানিক জাহাজটি ডুবে যায়। আটলান্টিকের তলদেশে ১২ হাজার ৫০০ ফুট গভীরে জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। ‘টাইটানিক’ সিনেমা নির্মাণের জন্য টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে ক্যামেরন ৩৩ বার আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে গিয়েছিলেন। এরপর ১৯৯৭ সালে তিনি নির্মাণ করেন ‘টাইটানিক’ চলচ্চিত্রটি।

 

প্রসঙ্গত, বেসরকারি সংস্থা ওশেনগেট ‘টাইটান’ নামের এ ডুবোযানটি পরিচালনা করত। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানায়, যানটিতে থাকা তাদের সিইও স্টকটন রাসম, শাহজাদা দাউদ এবং তার ছেলে সুলেমান দাউদ, হামিস হার্ডিং এবং পল-হেনরি নারগোলেট সবাই এ দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।

ওশেনগেটের এ যানটিতে করে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে একেকজন যাত্রী ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার খরচ করেছিলেন। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.