বাংলাদেশে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের স্বার্থে শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে সব রাজনৈতিক দল, তাদের সমর্থক ও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন। সেই সঙ্গে বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত বল প্রয়োগ বন্ধের আহ্বানও জানিয়েছে সংস্থাটি।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব আহ্বান জানানো হয়। গতকাল শুক্রবার (৪ আগস্ট) কমিশন তাদের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত প্রেস নোট প্রকাশ করে।
প্রেস নোটে মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের মুখপাত্র জেরেমি লরেন্স বলেছেন, বাংলাদেশে গত কয়েক মাসে বিরোধীদের বেশ কয়েকটি সমাবেশে সহিংসতার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। পুলিশ সেখানে রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও জলকামান ব্যবহার করেছে। এমনকি, পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে থাকা ব্যক্তিরা প্রতিবাদকারীদের ওপর হাতুড়ি, লাঠি, ব্যাট ও রডসহ নানা ধরনের বস্তু নিয়ে হামলা চালিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে হবে ও জনগণের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার সুযোগ দিতে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার যে অধিকার রয়েছে, তা চর্চার সুযোগ দিতে হবে। এছাড়া তৃতীয় কোনো পক্ষ জনগণের সেই অধিকার হরণ করতে গেলে, অধিকার রক্ষায় নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে।
প্রেস নোটে আরও বলা হয়, এসব ঘটনায় বিরোধীদলের সমর্থকদের পাশাপাশি কিছু পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। বিরোধীদলের জ্যেষ্ঠ নেতাদেরও প্রকাশ্যে মারধর করা হয়েছে। এমনকি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তাদের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। সমাবেশের আগে ও সমাবেশ চলাকালে বিরোধীদলের শত শত নেতাকর্মী ও সমর্থকদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
‘আমরা পুলিশের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, কেবল জরুরি প্রয়োজনেই নিয়ন্ত্রিতভাবে বল প্রয়োগ করা যেতে পারে। আর যদি বল প্রয়োগ করতেই হয়, তহালে বৈধতা ও যৌক্তিক কারণের ভিত্তিতেই করতে হবে। তাছাড়া কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই অতিরিক্ত বল প্রয়োগের বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির মুখোমুখি দাঁড় করাতে হবে।’
মানবাধিকার কমিশনের মুখপাত্র বলেন, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে ভোটের প্রচার যুক্ত ব্যক্তিদের জন্য নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমরা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা এমন এক পরিবেশ সৃষ্টির কথা বলছি, যা রাজনৈতিক বহুত্ববাদ ও ভিন্নমত প্রকাশে উৎসাহিত করে।
সূত্র: ওএইচসিএইচআর