গাজায় এখনই যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘিত হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এ অভিযোগের জেরে তার পদত্যাগ দাবি করেছে ইসরায়েল।
গতকাল মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) জাতিসংঘের এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। খবর আলজাজিরা ও বিবিসি।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে গাজার বেসামরিক লাখ লাখ বাসিন্দা। গত ১৫ দিনে গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৭৯১ ফিলিস্তিনি। অন্যদিকে ইসরায়েলের দেয়া তথ্যমতে দেশটির প্রায় এক হাজার ৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
হামাসের হামলার পরপরই গাজায় পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ সকল প্রকার জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে তেল আবিব। এতে ভয়ংকর মানবিক সংকটে পড়েছেন ২৩ লাখ গাজাবাসী। ইসরায়েলের এমন আচরণকে গণশাস্তির একটি রূপ বলে অভিহিত করেছে জাতিসংঘ।
এর আগে ইসরায়েল গাজার উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের দক্ষিণে সরে যেতে নির্দেশ দিলে কয়েক লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। বেঁধে দেয়া সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই ইসরায়েলি হামলায় হতাহত হয়েছে কয়েক হাজার।
নিরাপত্তা পরিষদের এক বক্তৃতায় জাতিসংঘ প্রধান ইসরায়েলকে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতের অনুরোধ করেন। তেল আবিবকে সতর্ক করে বলেন, হামাস-ইসরায়েল সংঘাতের ফলে এসব অঞ্চলে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।
যুদ্ধের পথে একদিনেই আগায়নি হামাস। ‘ফিলিস্তিন গত ৫৬ বছর যাবৎ শ্বাসরুদ্ধকর দখলদারিত্বের শিকার হয়ে আসছে’ বলেও মন্তব্য করেন এই বিশ্ব নেতা। তবে তিনি মনে করেন সাধারণ ফিলিস্তিনিদের ক্ষোভ হামাসের আক্রমণকে অনুমোদন দিতে পারে না। অন্যদিকে হামাসের কর্মকাণ্ডের জন্য সাধারণ গাজাবাসীরও কোনো দায় নেই বলে মত গুতেরেসের।
তিনি ইসরায়েলের সমালোচনা করে বলেন, বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করার অর্থ এই নয় যে তাদের দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সরে যেতে বলা যেখানে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি নেই। তাদের লক্ষ্যবস্তু করা কখনই মানবিক কাজ নয় বলেও দাবি তার।
আন্তোনিও গুতেরেসের এমন মন্তব্যকে ভালোভাবে নেয়নি ইসরায়েল। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য তাকে পদত্যাগ করতে হবে।
বিবিসি রেডিও-এর দ্য ওয়ার্ল্ড টুনাইটকে ইসরায়েলি মুখপাত্র লিওর হায়াত বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের বক্তৃতায় হামাস সন্ত্রাসীদের নৃশংসতা মাত্র এক মিনিট স্থান পেয়েছে এবং তার বক্তব্য সন্ত্রাসবাদের ন্যায্যতা দিয়েছে। এমন নৃশংসতা হলোকাস্টের পর আর দেখা যায়নি। তাদের পাশে দাঁড়ানোর পরিবর্তে তিনি ভুক্তভোগীদের দোষারোপ করেছেন।
