‘নামেই আমরা ক্যাজুয়াল। কাজ করতে হয় স্থায়ী শ্রমিকদের থেকে বেশি। হাজিরা ও বেতন পাই স্থায়ী শ্রমিকদের মতো ব্যাংক থেকেই। কাজ করছি প্রায় ১৫ বছর। আইডি কার্ড দেয়া হয়েছে তিন বছরের জন্য। তারপরও আমাদের স্থায়ী করার গরজ নেই সিবিএ বা বিমানের। সামনে নববর্ষ। স্থায়ী শ্রমিকরা ভাতা পেলেও আমরা বঞ্চিত হচ্ছি।
কথাগুলো বলছিলেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ১৫ বছর ধরে কর্মরত এক ক্যাজুয়াল শ্রমিক।
অভিযোগ উঠেছে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের শ্রমিক সংগঠন সিবিএ‘র অবহেলার কারণেই বছরের পর বছর ধরে কাজ করলেও নববর্ষভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রায় দুই হাজার ক্যাজুয়াল শ্রমিক।
নববর্ষভাতাকে ঘিরে তাই ক্ষোভ বিরাজ করছে প্রতিষ্ঠানটির বঞ্চিত অংশটির মধ্যে।
বিমানের ক্যাজুয়াল শ্রমিকরা জানান, স্থায়ী শ্রমিকদের মতোই কাজ করেন তারা। শ্রমআইনে বলা আছে, কোনো শ্রমিককে তিন মাসের বেশি ক্যাজুয়াল শ্রমিক হিসেবে কাজ করানো যাবে না। কিন্তু এখানকার বেশিরভাগ ক্যাজুয়াল শ্রমিকই ১০ বছর থেকে ১২ বছর ধরে কাজ করছে। তারা স্থায়ী শ্রমিকের মতো সব কাজ করলেও নববর্ষভাতা পান না। ২০১৬ সালের মার্চ মাসে সিবিএ সভাপতি মশিকুর রহমানের স্বাক্ষরিত একটি নামমাত্র চিঠি দেয়া হয় বিমানে। তাতে ক্যাজুয়াল শ্রমিকদের নববর্ষের ভাতা দেয়ার দাবি জানানো হয়। তারপর প্রায় ১ বছর পার হয়ে গেলেও বিমানের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সিবিএ। চলতি বছরের মার্চ মাসে ফের একটি দায়সাড়া চিঠি দিয়েছে তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিমানের এক ক্যাজুয়াল শ্রমিক বলেন, বিমানের স্থায়ী শ্রমিকরা তাদের সব কাজ ক্যাজুয়ালদের দিয়ে করান। স্থায়ীরা বেশিরভাগ সময় অফিসই করেন না। শুধু হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। আর সিবিএ নেতারা বিমানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে মিলে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেন কেবল। সিবিএ চাইলেই বিমান কর্র্তৃপক্ষের সঙ্গে সফল আলোচনা করে আমাদের নববর্ষ ভাতা‘র ব্যবস্থা করতে পারতো।
তবে এসব অভিযোগ মানতে রাজি নন সিবিএ সভাপতি মো: মশিকুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি যাতে ক্যাজুয়াল শ্রমিকরা নববর্ষভাতা পান। কিন্তু বিমান দিতে রাজি হয়নি। তারা আমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে বসেনি। এখানে সিবিএ কী করবে!
নাম না প্রকাশ করার শর্তে বিমানের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সিবিএ নেতারা নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করার বাইরে কোনো কাজ করে না। শ্রমিকদের স্বার্থ নিয়ে তাদের কোনো ভাবনা বা উদ্যোগ নেই। কেননা নববর্ষভাতা ক্যাজুয়াল শ্রমিকরা পেলে তাতে সিবিএ’র নেতাদের কোনো লাভ নেই। তারা তো আর তা পাবেন না! তাই এ বিষয়ে সিবিএ নেতারা মোটেই আগ্রহী নন।
তবে এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রশাসন বিভাগের পরিচালক মমিনুল ইসলাম।
সূত্রঃ বাংলানিউজ২৪.কম