প্রথমবার নারীর নেতৃত্বে উড়ল বাংলাদেশ বিমানের ড্রিমলাইনার।
প্রথমবারের মত একজন নারী পাইলটের পরিচালনায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ড্রিমলাইনার উড়ে গেল ঢাকা থেকে রিয়াদে। এ ফ্লাইটের ফার্স্ট অফিসারও ছিলেন একজন নারী।
২৪ ডিসেম্বর রাতে আকাশবীণার ওই উড়ানে পাইলটের আসনে ছিলেন আলিয়া মান্নান। আর তার ফার্স্ট অফিসার ছিলেন মুনজারিন রাইয়ান। ফ্লাইট পরিচালনায় অন্যান্য বিভাগেও নেতৃত্ব দেন নারীরা।
বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুল হক বলেন, এর আগে ব্রুনেইসহ কয়েকটি দেশে নারী পাইলটরা ড্রিমলাইনার চালিয়েছেন। তবে বাংলাদেশে বিজি-০৩৯ হল ড্রিমলাইনারের প্রথম ফ্লাইট, যেটা নারীরা চালিয়েছেন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জনসংযোগ দপ্তর এ ঘটনাকে বর্ণনা করেছে বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘একটি বিরল ঘটনা’ হিসেবে।
গত মে মাসে বিমানের বহরে যুক্ত হয় নতুন বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার ‘আকাশবীণা’। সাড়ে ১২ হাজার ঘণ্টা ফ্লাইট পরিচালনার অভিজ্ঞতা থাকা আলিয়া মান্নান এর আগে বোয়িং-৭৭৭ চালালেও ড্রিমলাইনার চালানোর অভিজ্ঞতা হল এবারই প্রথম।
তিনি বলেন, “সত্যিই খুব ভালো লেগেছে, বাংলাদেশের প্রথম নারী হিসেবে ড্রিমলাইনার ৭৮৭ পরিচালনা করেছি। আমার সাথে সেদিন থাকা ফার্স্ট অফিসার মুনজারিন রাইয়ান আর ফ্লাইটের দায়িত্বে থাকা প্রত্যেক বিভাগের নারী প্রধানরাও এই ইতিহাসের অংশ হয়েছেন।”
১৯৯২ সালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে প্রথম গেজেটেড পাইলট হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন আলিয়া মান্নান। এরপর ২০০৮ সালে তিনি এয়ারবাস ও ২০১৪ সাল থেকে বোয়িং ৭৭৭ চালানো শুরু করেন।
আলিয়া মান্নান বলেন, “শুক্রবার সন্ধ্যায় আমি আর মুনজারিন আবারও ড্রিমলাইনার নিয়ে কুয়ালামপুর যাব। এরপর রিয়াদে ফ্লাইট পরিচালনা করার কথা রয়েছে। এখন নারীদের মধ্যে একমাত্র আমিই ড্রিমলাইনার চালাচ্ছি।”
নবীন নারী পাইলটদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “কেউ যদি তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য দিনের পর দিন চেষ্টা করে তাহলে একদিন সে সফল হবেই। এখন অনেক ফ্লাইং ক্লাবে নারীরা পাইলট হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তাদের জন্য শুভকামনা থাকছে।”
বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে বর্তমানে ১৩৫ জন পাইলট রয়েছেন, তাদের মধ্যে ১১ জন নারী।
“এখন অনেক নারীই এ পেশায় আসতে চাইছেন। তাদের জন্য আলিয়া মান্নানের ওই ফ্লাইট অনুপ্রেরণা যোগাবে।”