প্রকাশিত সংবাদে বিমানের প্রকৌশল বিভাগের প্রতিবাদ

biman logo‘গত ১০ মার্চ ২০১৫, শুক্রবার এভিয়েশন নিউজ ওয়েভ সাইটে “বিমানের প্রকৌশল বিভাগ সোনার অবৈধ গোডাউন, আটকহল মেকানিক ইমরান” শিরোনামে প্রকাশিত বিভ্রান্তিকর, বানোয়াট ও অসত্য তথ্য সম্বলিত সংবাদের উপর বিমান কর্তৃপক্ষের বক্তব্য নিম্নরুপ ঃ
বাংলাদেশ বিমানের প্রকৌশল বিভাগ তথা হ্যাংগার ও ওয়ার্কশপ সমূহ উড়োজাহাজ রক্ষণাবেক্ষন, মেরামত ও ওভারহলিং কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এভিয়েশন ইন্ডাষ্ট্রিতে এটাই প্রচলিত নিয়ম। কোন উড়োজাহাজে ক্রটি বা সিষ্টেমে বিকল হলে মেরামত কাজের জন্য অথব ানির্ধারিত সময় পরপর রক্ষণাবেক্ষন কাজের প্রয়োজন মত উড়োজাহাজকে হ্যাংগারে এনে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সমন¦য়ে মেরামত কার্য সম্পন্ন করতে হয়।

বিমানের সকল উড়োজাহাজ বিভিন্নরুটে প্রতিদিন বা সপ্তাহে কত বার গমনাগমন করবে তা বিভিন্ন ফ্লিট ও রুট প্লানিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুংখানুপুংখ রূপে বিচার বিশ্লেষন পূর্বক এবং গন্তব্য বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ তথা সেই দেশের বেসামরিক বিমান চলাচল নীতিমালার প্রয়োগ পূর্বক বিমানের উর্ধ¦তন কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত করে থাকেন। এতে একক ভাবে প্রকৌশল বিভাগের কোন ভূমিকা নেই। সংবাদে প্রকাশিত প্রকৌশল শাখা কর্তৃক ৮/৯ ঘন্টার বেশি উড়োজাহাজ ফøাই করতে দিচ্ছেনা মর্মে তথ্যটি একেবারেই ভিত্তিহীন এবং সঠিক তথ্য ভিত্তিক নয়। এছাড়া একটি ফøাইট ল্যান্ড করার সাথে সাথেই উক্ত এয়ারক্রাফট প্রচলিত বিধান মতেই বোর্ডিং ব্রিজ/বে থেকে সরাতে হয়, যাতে অন্য এয়ারক্রাফট সে ¯হানে রাখা যায়। এয়ারক্রাফট সরাতে দেরি হলে বিমানকে বোর্ডিং ব্রিজ এর জন্য অতিরিক্ত চার্জ প্রদান করতে হয়।

উড়োজাহাজে ররক্ষণাবেক্ষন কার্যক্রম সমূহ শুধুমাত্র ঐ উড়োজাহাজের প্রস্তুুতকারক সং¯হার প্রকাশিত মেইনটেন্যান্স প্রোগ্রাম, মেইনটেন্যান্স সিডিউল, মেইনটেন্যান্স ম্যানুয়েল, ষ্ট্রাকচার‌্যাল ম্যানুয়েল, ওয়ারিং ডায়াগ্রাম ম্যানুয়েলসহ অন্যান্য রক্ষণাবেক্ষন ম্যানুয়েল সমূহের বর্ণিত সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সম্পাদন করতে হয়। উড়োজাহাজের কোন প্রকৌশলীবা উপরোল্লিখিত পদ্ধতি সমূহের বাইরে রক্ষণাবেক্ষনে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজের মতো করে হ্যাংগারে উড়োজাহাজ এনে ম্যানুয়েল বর্হিভূত কোন কার্য সম্পাদন করতে পারেনা। আধুনিক উড়োজাহাজের কোন ক্রটি দেখা দিলে তা উড়োজাহাজের মধ্যে ¯হাপিত মনিটর বা কম্পিউটারে ধরা পড়ে এবং পাইলটবা প্রকৌশলী তা নির্দিষ্ট লগবই-এ লিপিবদ্ধ করার পরই ঐ ক্রটি সমূহ এয়ারওয়ার্দিনেস রেগুলেশন অনুযায়ী সমাধান করতে হয়। সুতরাং একটি ফøাইট ল্যান্ড করার পর পরই দ্রুত নানা ছলছুতায় উড়োজাহাজটি হ্যাংগারে নিয়ে এসে উড়োজাহাজের নাট-বল্টু খুলে অবৈধ স¦র্ণালংকার বের করার বিষয়টি সম্পূর্ণ বানোয়াট।

সোনা চোরচালানের সংগে উড়োজাহাজ রক্ষণাবেক্ষনের কোন সম্পর্ক নেই। আগেই বলা হয়েছে উড়োজাহাজ রক্ষণাবেক্ষন করা হয় ঐ উড়োজাহাজের মেইনটেন্যান্স প্রোগ্রাম অথবা বিকল হয়ে যাওয়া কোন য¤ত্রাংশের ক্রটির প্রকৃতির উপর। যে কোন কর্মচারী/কর্মকর্তা প্রয়োজন ব্যতিরেকে নিজের মনমত সিদ্ধান্ত নিয়ে কোন উড়োজাহাজ খোলা, বন্ধ করা বা কাজ করতে পারেনা। সোনা চোরাচালান রোধ কল্পে বিমান প্রকৌশল বিভাগ সর্বদা শুল্ক ও গোয়েন্দা সং¯হাকে সর্বাঈীন সহযোগিতা করে আসছে এবং তাদের চাহিদা অনুযায়ী উড়োজাহাজে সরেজমিনে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজে সাহায্য সহ সকল প্রকার তথ্য-উপাত্ত প্রদান করেছে। এছাড়াও বিমান কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সব ধরণের পদক্ষেপ ইতোমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে। যে সকল কর্মচারীকে সোনা চোরাচালানকারী হিসেবে সন্দেহ করা হয়েছে প্রকৌশল বিভাগ তাৎক্ষনিক তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যব¯হা গ্রহণ করেছে।

কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক ভাবে সংবাদে প্রকৌশল বিভাগের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সোনা চোরাচালানের সংগে জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়েছে এবং আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, চোরাচালানের ভাগ পায় প্রকৌশল শাখার টপ টু বটম। এ ধরণের বানোয়াট ও অসত্য সংবাদ মোটেই কাম্য নয়। সংবাদে ডেপুটি চীফ ই¤িজনিয়ার জি এম ইকবাল সাহেবকে উড়োজাহাজ খোলা ও মেরামত কাজের নেতৃত্ব দান কারী উল্লেখ করে সোনা চোরাচালানের সংগে জড়িত করা হয়েছে। প্রকৃত সত্য হল জনাব জিএম ইকবাল সাহেব বিগত ১০ বৎসর যাবৎ সেন্ট্রাল ই¤িজনিয়ারিং তথ্য ই¤িজনিয়ারিং সার্ভিসে কাজ করছেন। উড়োজাহাজ খোলা, মেরামত, রক্ষণাবেক্ষন অথবা উড়োজাহাজ হ্যাংগারে আনা-নেওয়ার ব্যাপারে তার কোন সংশ্লিষ্টতা বা নিয়¤ত্রণ নেই । উড়োজাহাজ মেরামত রক্ষণাবেক্ষন এবং সেন্ট্রাল ইঞ্জিনিয়ারিং দুইটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিভাগ। উড়োজাহাজ মেরামত বা রক্ষণাবেক্ষন বিভাগের কোন কর্মচারী বা কর্মকর্তা অথবা কোন কর্মকান্ড জিএম ইকবাল সাহেবের নিয়¤ত্রণাধীন নয়। সুতরাং সংবাদে প্রকাশিত জিএম ইকবাল সাহেবের ইশারায় উড়োজাহাজ খোলা ও মেরামত হয় মর্মে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা সবৈব মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর এবং উদ্দেশ্য প্রনোদিত।

এ মর্মে প্রত্যায়ন করা যায় যে, জনাব জিএম ইকবাল বিমানে নিয়োগ প্রাপ্ত হওয়ার পর থেকে সততা, নিষ্ঠা ও বিচক্ষনতার সংগে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে আসছেন। এ যাবৎ কখনো কোন অবৈধ ও অনিয়মতান্ত্রিক কাজের সংগে তিনি জড়িত হননি। ব্যক্তি বিশেষ এবং বিমানের প্রকৌশল বিভাগের মর্যাদা খর্ব করার জন্য মিথ্যা, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর এ তথ্য পরিবেশিত হয়েছে মর্মে প্রতিয়মান হয়।

বিমান সম্পর্কে জন মনে যাতে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করতে না পারে কিম্বা জাতীয় পতাকা বাহী বিমানের ভাবমূর্তি যাতে ক্ষুণœ না হয়, সেজন্য বিমান সম্পর্কে সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে আরো সর্তকতা অবলম্বনের জন্য সকলকে বিনীত অনুরোধ করা যাচ্ছে।’

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.