কাতারে পাইলট আটক : ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি।
বাংলাদেশ বিমানের পাইলট ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদের পাসপোর্ট না থাকার বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেইসঙ্গে তিন কর্মদিবসের মধ্যে এ কমিটিকে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আজ শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব গাজী তারিক সালমন স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, ‘পাসপোর্ট ছাড়া পাইলট ফজল মাহমুদের দোহা ভ্রমণের কারণ অনুসন্ধান করবে কমিটি। একইসঙ্গে কমিটি শাহজালাল বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলার কারণ নিরূপণ করবে। চিহ্নিত করবে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ত্রুটি। কমিটি জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত করে তিন কর্মদিবসের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।’
চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাসিমা বেগমকে। এছাড়া অন্যদের মধ্যে রয়েছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (রাজনৈতিক-৪) মো. হেলাল মাহমুদ শরীফ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকী। কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব (রাজনৈতিক-১) মো. জাহাঙ্গীর আলমকে।
এর আগে কাতারে বাংলাদেশ বিমানের পাইলট ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদ চৌধুরীকে আটক বা জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা মোটেও ‘সঠিক নয়’ বলে জানায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। বিকেলে বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিনল্যান্ড থেকে আনতে পাসপোর্ট ছাড়াই বিমানের একটি ফ্লাইট নিয়ে কাতারের দোহা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদ। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দোহা ইমিগ্রেশনে বাংলাদেশ বিমানের পাইলট আটক বা গ্রেপ্তার করার কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে সেখানে কোনো পাইলটকে আটক বা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি।’
গত ৫ জুন বিমানের ঢাকা-চট্টগ্রাম-দোহা রুটে বিজি১২৫ ফ্লাইটের অপারেটিং ক্যাপ্টেন হিসেবে ফ্লাইট পরিচালনা করেন ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদ। দোহায় অবতরণ করার পর তিনি লক্ষ্য করেন যে, তার পাসপোর্টটি তার সঙ্গে নেই। এমতাবস্থায় তিনি ইমিগ্রেশনে না গিয়ে দোহা এয়ারপোর্ট এ বিমান স্টেশন ম্যানেজার ও ঢাকা অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দোহা এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন চেক পয়েন্ট এর আগে ট্রানজিট হোটেল অরিক্স এ চলে যান।
এরপর গতকাল সন্ধ্যায় তার পাসপোর্ট দোহায় প্রেরণ করা হয় এবং তিনি স্বাভাবিক নিয়মেই ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে দোহা নগরীতে বিমানের ক্রুদের নির্ধারিত হোটেল ‘ক্রাউন প্লাজায়’ চলে যান।
বর্তমানে পাইলট ফজল মাহমুদ ওই হোটেলে অবস্থান করছেন এবং বিমান কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামী ১০ জুন ভোর রাতে দোহা থেকে বিজি১২৬ ফ্লাইট অপারেট করে ঢাকা আসবেন বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
এতে স্পষ্ট করে বলা হয়, ‘পাসপোর্টবিহীন বিমান পাইলটকে আটকে দিলো দোহা ইমিগ্রেশন পুলিশ’ শীর্ষক সংবাদসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।