৪৩ প্রাণ কেড়ে নিলো হাগিবিস

৪৩ প্রাণ কেড়ে নিলো হাগিবিস।

শক্তিশালী টাইফুন হাগিবিসের আঘাতে তছনছ জাপানে ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকা জীবিতদের সন্ধানে ব্যাপক উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে দেশটির উদ্ধারকারী কর্মীরা। প্রবল শক্তিশালী টাইফুনের আঘাতে দেশটির পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত ৪৩ জনের প্রাণহানি ও কয়েকশ আহত এবং অজ্ঞাতসংখ্যক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির সরকার।

ফরাসী বার্তাসংস্থা এএফপি বলছে, জাপানে বিধ্বংসী টাইফুন হাগিবিস আঘাত হানে শনিবার রাতে। ঘণ্টায় ২১৫ কিলোমিটারের বেশি গতিতে এগিয়ে আসা টাইফুনের তাণ্ডবে শত শত বাড়ি-ঘর ধ্বংস হয়েছে। দেশটির ৪৭টি অঞ্চলের মধ্যে ৩৬টিতে ভারী বর্ষণের কারণে ভয়াবহ ভূমিধস ও বন্যা দেখা দিয়েছে।

সোমবার দুর্যোগ মোকাবেলায় জরুরি বৈঠক করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে। বৈঠকের পর তিনি বলেছেন, এমনকি এখন পর্যন্ত অজ্ঞাতসংখ্যক মানুষ দুযোর্গ আক্রান্ত এলাকায় নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের উদ্ধারে উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। তারা দিন-রাত উদ্ধার কাজ পরিচালনা করছেন।

সেনাসদস্য-সহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে জীবিতদের উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে এখনো বৃষ্টি ও বাতাস অব্যাহত থাকায়। দেশটির আবহাওয়া সংস্থা বলছে, জাপানের মধ্য ও পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে নতুন করে আরও ভূমিধসের ঘটনা ঘটতে পারে।

দেশটির আবহাওয়া সংস্থা বলছে, সোমবার সকাল থেকে ক্রমশ শক্তি হারিয়ে নিরক্ষীয় ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে হাগিবিস। এই ঝড় এখন জাপানের উত্তর-পূর্ব উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সবচেয়ে শোচনীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মধ্য জাপানের নাগানো অঞ্চলে। এই অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি-ঘরের দোতলা পর্যন্ত পানি উঠেছে।

জাপানের মন্ত্রিপরিষদের সচিব ইয়োশিহিদে সুগা বলেন, হাগিবিসের প্রভাবে দেশের ৩ লাখ ৭৬ হাজার বাড়ি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে প্রায় ১৪ হাজার পরিবারে। দেশটির মধ্য, পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে এখনো বন্ধ রয়েছে টেলিফোন ও মোবাইল সেবা।

টাইফুনের তাণ্ডবে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়। উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নিয়েছে পুলিশ, দমকল, দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী, উপকূলরক্ষী বাহিনীর ১ লাখ ১০ হাজার সদস্য। পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ২৭ হাজার সদস্যও মোতায়েন রয়েছে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.