কার্গো এয়ারের অনুমোদন পেল ইউএসবাংলা এয়ারলাইন্স

করোনা দুর্যোগে দেশের আমদানি রফতানি সচল রাখার জন্য বেসরকারী এয়ারলাইন্স ইউএস বাংলাকে কার্গো এয়ারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এয়ারলাইন্সটির চারটি বোয়িং ৭৩৭ এয়ারক্রাফটকে বেলি কার্গো হিসেবে আপদকালীন সময়ের জন্য পরিচালনা করা হবে। দুই একদিনের মধ্যে কার্গো ফ্লাইটের শুভ্ উদ্বোধন করা হবে জানা গেছে। তবে সিভিল এভিয়েশন জানিয়েছে, করোনা দুর্যোগে দেশের স্বার্থেই জরুরী চিকিৎসা সামগ্রী আনার জন্য এ ধরনের অনুমোদন দেয়া হয়। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান জানিয়েছেন- জাতীয় দুর্যোগ বিবেচনায় কার্গো ফ্লাইটের অনুমোদন দেয়া হয়। এদিকে শনিবার থাইল্যান্ড থেকে ২৮ জন বাংলাদেশী ও একটি মরদেহ দেশে ফিরিয়ে এনেছে ইউএসবাংলার বিশেষ ফ্লাইটে।

জানতে চাইলে সত্যতা স্বীকার করে ইউ এস বাংলার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন  বলেন, এই মুহূর্তে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। একমাত্র ইউএস বাংলা সপ্তাহে একটি করে ফ্লাইট অপারেট করছে চীনে। অন্যদিকে দেশের জাহাজ যোগাযোগ ও সাময়িক স্থগিত থাকায় বিপাকে পড়েছে দেশের আমদানি রফতানি খাত। এতে করে দেশের অর্থনৈতিক অচলাবস্থার উপক্রম হয়েছে। সেজন্য আমরা চেয়েছিলাম অন্তত ইউএস বাংলার উড়োজাহাজগুলোকে কার্গো হিসেবে পরিচালনা করে জরুরী পণ্য আমদানি করে মার্কেট ফ্লো ধরে রাখা। বিশেষ করে করোনার জন্য ওষুধ সামগ্রীর পাশাপাশি শিল্পের কাঁচামাল ও অন্যান্য পণ্য আমদানি যদি স্বাভাবিক রাখা যায়- তবে দেশের অর্থনীতি অনেকটাই স্বাভাবিক রাখা যাবে। সেটা বিবেচনায় নিয়ে সিভিল এভিয়েশন কার্গো ফ্লাইট পরিচালনার অনুমোদন দেয়।

জানা গেছে, ইউএস বাংলার চারটি ৭৩৭ -৮০০ মডেলের এয়ারক্রাফটকে প্রাথমিকভাবে কার্গো হিসেবে অনুমোদন দেয়া হয়ে।্ এয়ারলাইন্সটির আবেদনের প্রেক্ষিতে এ অনুমোদন প্রদান করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান জানান- আইকাও রুলস রেগুলেশান মেনেই এ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। উড়োজাহাজের নরমাল কার্গো হোল্ডেই তারা মালামাল বহন করবে। অর্থাৎ যাকে বলা হয় বেলি কার্গো। প্যাসেঞ্জার ফ্লাইটকেই কার্গো হিসেবে আপদকালীন সময়ে অপারেট করা হবে।

জানা গেছে-একটি ৭৩৭ -৮০০ এয়ারক্রাফটের কার্গো বেলিতে যাত্রী ব্যতীত শুধু কার্গো সর্বোচ্চ ২০ টন বহনের সক্ষমতা রয়েছে। এভাবে চারটি উড়োজাহাজে অন্তত দৈনিক দুটো করে ফ্লাইট অপারেট করলেও দুশো টন মালমাল বহন করা সম্ভব। যা এই দুর্যোগ মুুহূর্তে আমদানি রফতানির একমাত্র ভরসা হতে পারে। বর্তমানে দেশের সব ধরনের মালামাল দেশ বিদেশে আনা নেয়া বন্ধ রয়েছে। সীমিত আকারে কিছু কার্গো (নন সিডিউল ফ্লাইট) জরুরী কুরিয়ার সার্ভিস ও অন্য পণ্য আমদানি রফতানি করছে। ইউএস বাংলাকে অনুমোদন দেয়ায় এখন-ভারত, চীন, থাইল্যান্ড, সৈৗদি আরব, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার বাহরাইনসহ আরও কয়েকটি দেশে পণ্য আমদানি রফতানি করা সম্ভব হবে। প্রতিদিন অন্তত ৭/৮টি ফ্লাইট অপারেট করা সম্ভব হবে।

ইতোমধ্যে এয়ারলাইন্সটির সঙ্গে কার্গোর লোকাল এজেন্টের সঙ্গে আলোচনাও শুরু হয়েছে। দেশের শীর্ষ রফতানিকারকরা বলছেন-জাতির দুর্যোগ মুহূর্তে ইউএস বাংলার এ পদক্ষেপ একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এতে দেশের শিল্প ও ব্যবসা বাণিজ্যে গতি ফিরে আসবে। এখন গার্মেন্টস পণ্যসহ শিল্পের কাঁচামালের সরবরাহ নিয়ে দুশিশ্চন্তা করতে হবে। সামগ্রিকভাবে এটার একটা ইতিবাচক দিক রয়েছে। এতে দেশের মুদ্রা দেশেই থেকে যাবে। এতদিন যা বিদেশী ক্যারিয়ারগুলো নিয়ে যেত।

 

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.