জাপানে ভূমিকম্পে নয়জনেযুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ দপ্তর ইউএসজিএস এর তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় শনিবার প্রথম প্রহরে রাত ১টা ২৫ মিনিটে জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কুমামতো প্রদেশে এ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭।
কিয়েশু পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল দেশটির ইউকি শহর থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে, ভূ-পৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গভীর রাতে এ ভূমিকম্পের পর তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
প্রাথমিকভাবে এক মিটার উঁচু সুনামির সর্তকতা জারি করা হলেও পরে তা প্রত্যাহার করার খবর জানায় স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো।
৭ মাত্রার ওই ভূমিকম্পের পর ২০ মিনিটের মধ্যে ওই অঞ্চলে ৫ দশমিক ৮ ও ৫ দশমিক ৭ মাত্রার আরও দুটি ভূকম্পন অনুভূত হয়।
প্রায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কয়েক দফার এসব ভূমিকম্পে ২০১১ সালের সুনামির পর বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে সরকার। এ অবস্থায় নিরাপত্তা ও উদ্ধারের জন্য তৎপর সরকার কুমামতো বিমানবন্দরের সব ফ্লাইট বাতিল করেছে; বন্ধ করেছে ট্রেন চলাচলও।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে কুমামতো ও কিয়েশু প্রদেশে ৬ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্পে বিপুল সংখ্যক বাড়ি-ঘর ধসে পড়ে, ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাস্তাঘাট।
রাতের ওই ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে অন্তত নয়জনের মৃত্যু হয়, আহত হন সহস্রাধিক।
রাজধানী টোকিওতে শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে জাপানের মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়াশিদে সুগা বলেন, “২০১১ সালের সুনামির পর এটি বড় ধরনের ভূমিকম্প। ১৯টি বাড়ি ধসে কবরস্থানে পরিণত হয়েছে। আমরা উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছি।”
ওই ভূমিকম্পের ধ্বংস্তূপ সরিয়ে হতাহতদের উদ্ধারের চেষ্টার মধ্যে শনিবার রাতের প্রথম প্রহরে বড় ধরনের এই ভূমিকম্প হলো।
এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল কুমামতো শহর থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে। উৎপত্তিস্থলের মাত্র ১২০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে কিয়েশু পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। একই এলাকার মধ্যে রয়েছে সেন্দাই পারমাণবিক কেন্দ্র।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এই শহর ছাড়াও ৫ থেকে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে পাশের কিয়েশু ফুকাওকা, কুরমি, কিকচি এলাকায়।
তাৎক্ষণিকভাবে এই ভূমিকম্পে প্রশাসনের কোনো বক্তব্য পাওয়া না গেলেও স্থানীয় পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, শনিবার রাতের ভূমিকম্পে বেশ কয়েকটি বাড়ি ধসে পড়েছে; রাস্তাঘাটও ভেঙে গেছে।
অল্প সময়ের ব্যবধানে কয়েক দফা এসব ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কুমামতো শহরের মাইশি এলাকা। গত ২৪ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ ও গ্যাসবিহীন রয়েছে এই অঞ্চল।
তবে সরকারের দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার সকালের মধ্য কুমামতো অঞ্চলের প্রায় চল্লিশ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে স্থানীয় স্কুল, কিন্ডারগার্টেন ও উপাসনালয়গুলোতে স্থান দেওয়া হয়েছে।
ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতার জন্য বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর (এসডিএফ) এক হাজার সাতজন সদস্য, এক হাজার ৯২০ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও দুই হাজার ৯৩৭ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মী কাজ করে যাচ্ছে।র মৃত্যুর পর একদিন পার হতে না হতেই ফের শক্তিশালী ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে।