গত বছর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে যে বৈশ্বিক জলবায়ু চুক্তি হয়েছিল তাতে স্বাক্ষর করেছে প্রায় ১৭০টি দেশ। শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন এসব দেশের প্রতিনিধিরা। কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তিতে একই দিনে এতোগুলো দেশের স্বাক্ষর প্রদান ইতিহাসে এটাই প্রথম।
২০১৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত ১৯৬টি দেশ জলবায়ু চুক্তিতে সম্মতি প্রদান করে। ওই চুক্তিতে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সম্মত হয়েছিলেন বিশ্বনেতারা। চুক্তি অনুসারে, ২০২০ সালের পর থেকে কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলো জলবায়ু তহবিলে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার বা ৯২ বিলিয়ন ইউরো দেবে। এ অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর উন্নয়নে ব্যয় করা হবে।টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্যারিস চুক্তির প্রয়োগ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন এর আগে সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিদের ২২ এপ্রিল প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে স্বাক্ষরের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। এক সঙ্গে এতোগুলো দেশের কোনো চুক্তিতে স্বাক্ষর আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক ইতিহাসে রেকর্ডই বটে। যে সব দেশ শুক্রবার এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে না, তারা এটি এর জন্য আরো একটি বছর সময় পাবেন। ২০২০ সালের মধ্যে চুক্তিতে স্বাক্ষরের বাধ্যকতা ছিলো। তবে অনেকের ধারণা শেষ সময়ের আগেই চুক্তিটিতে বিশ্বের সব দেশ স্বাক্ষর করবে।
জাতিসংঘের মহাসচিব স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘ পরিণতিবিহীন ভোগের যুগ শেষ।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সময়ের বিরুদ্ধে লড়াই করছি। আমি সব দেশকে জাতীয় পর্যায়ে চুক্তিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আজকে আমরা ভবিষ্যতের জন্য একটি নতুন চুক্তিতে স্বাক্ষর করলাম।’
চুক্তিটি স্বাক্ষরের পর সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে অবশ্যই তাদের অভ্যন্তরীন নিয়মের ভিত্তিতে প্যারিস চুক্তির অনুমোদন দিতে হবে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইতিমধ্যে ১৫ টি দেশ, যেগুলোর অধিকাংশই ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র সমুদ্র উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, সেসব দেশ তাদের দেশে চুক্তিটির অনুমোদন দিয়েছে।