তেলের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে বিকল্প অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ব্যাপকভিত্তিক অর্থনৈতিক সংস্কার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে সৌদি আরব। সোমবার দেশটির মন্ত্রিসভায় এ সংস্কার পরিকল্পনা অনুমোদিত হয়।
এ অর্থনৈতিক সংস্কার পরিকল্পনাকে বলা হচ্ছে ‘ভিশন ২০৩০’। পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী ১৪ বছরে অর্থাৎ ২০৩০ সালের মধ্যে সৌদি আরবের তেলপ্রধান অর্থনীতিকে বহুমুখী সম্পদভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তর করা হবে।
সৌদি আরবের ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান সোমবার অর্থনৈতিক সংস্কার পরিকল্পনা প্রকাশের পর বলেন, বিশ্ববাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সৌদি আরব পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড গঠন করছে।
প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান আরো বলেন, সৌদি আরবে বিদেশিদের থাকার সুবিধার্থে গৃহায়ণ মন্ত্রণালয় ঢেলে সাজানো হচ্ছে। বিদেশিরা যাতে পাঁচ বছর থাকার সুযোগ পায়, সেজন্য ‘গ্রিন কার্ড’ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
একই দিন সৌদি আরবের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্রাউন প্রিন্স বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় সরকারি মালিকানাধীন তেল কোম্পানি আরামকোর শেয়ার বিক্রি করা হবে। শেয়ারের অর্থ দিয়ে ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়নের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় তহবিল গঠন করা হবে।
‘আরামকো কোম্পানির পুঁজির আকার বিশাল। এ থেকে পাঁচ শতাংশের কম শেয়ার বিক্রি করা হবে। আরামকো ২ট্রিলিয়ন থেকে ২ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের কোম্পানি।’
গত ১২ মাস সৌদি আরবের অর্থনীতি মন্দায় ধুকছে। গত বছর বাজেট ঘাটতি ছিল ৯৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ বছর শেষে বাজেট ঘাটতি হতে পারে ৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৪ সালে সৌদি আরবের রিজার্ভ ছিল ৭৪৬ বিলিয়ন ডলার, যা বর্তমানে কমে ৬১৬ বিলিয়ন ডলারে ঠেকেছে। ঘাটতি বাজেট মোকাবিলা করতে গিয়ে রিজার্ভ হু হু করে কমে যাচ্ছে।
সৌদি আরবের অর্থনীতি ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ আহমেদ আল-ইব্রাহিম বলেছেন, ‘এর আগেও সৌদি আরব এমন পরিবর্তনের কথা বলেছে। এখন দেখার বিষয় হচ্ছে, তারা কীভাবে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে।
তিনি আরো বলেন, পরিকল্পনার কিছুটা বাস্তবায়ন করতেও সরকারকে সৌদি সমাজের সহযোগিতা দরকার হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যদি নারীদের কর্মসংস্থান বাড়াতে হয়, তাহলে সমাজ ব্যবস্থা উদার করতে হবে। ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়নে সফল হতে হলে সৌদি সমাজকে সরকারের জন্য অনেক অবদান রাখতে হবে।
সৌদি আরবের তেলের রিজার্ভ এ মুহূর্তে ২৬৭ বিলিয়ন ব্যারেল। তাদের আরো ৯০০ বিলিয়ন ব্যারেল তেল মজুদ আছে বলে জানা যায়। তবে এ বিষয়ে তথ্য পরিষ্কার নয়।