সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রবাসী কর্মীদের জন্য টিকা নিশ্চিত করছে। তবে বিদেশগামী বা প্রবাসী পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) নিবন্ধন করতে হবে। কিন্তু এই কঠোর লকডাউনকালে বিএমইটি- র কেন্দ্রীয় অথবা স্থানীয় অফিসে গিয়ে এই রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা কতটুকু বাস্তবসম্মত? আর এই কাজটি বাস্তব রূপরেখায় রূপান্তর করতে অগ্রণী ভূমিকায় চলে আসলো বিদেশ যাত্রায় প্রবাসী কর্মীদের পাশে থাকা সাম্প্রতিক সময়ের এক অতিগুরুত্বপূর্ণ সংযোজন, একটি ডিজিটাল প্লাটফর্ম, আমি প্রবাসী অ্যাপ। এই পর্যন্ত আনুমানিক ৭০ হাজারের কাছাকাছি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে গত ১৩ দিনে যা এক অনন্য সাফল্য । প্রতি বছর আমাদের দেশ থেকে গড়ে ৭ লক্ষ্য মানুষ বিদেশে তাদের কর্মসংস্থানে যোগদানের জন্য গমন করে, সেই হিসেবে প্রায় ১০ শতাংশ প্রবাসী কর্মী মাত্র দুই সপ্তাহেই আমি প্রবাসী অ্যাপ দ্বারা বি এম ইটি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছে।
প্রবাসী কর্মীদের টিকা প্রদানের বিষয়টি জানাতে গত ৫ জুলাই এ টু আই একটা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক এমপির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ (বিএমইটি) ব্যুরোর মহাপরিচালক শহিদুল আলম তাতে উপস্থিত ছিলেন।
ঘরে বসে যে কেউ এই নিবন্ধন করতে পারবেন। গুগল প্লে স্টোর থেকে আমি প্রবাসী অ্যাপটি নামানো যাবে। চাইলে https://www.amiprobashi.com/ গিয়েও অ্যাপটিতে নিবন্ধন করা যাবে।
নিবন্ধন করতে হলে, প্রথমে নিজের মোবাইল নম্বর দিয়ে আমি প্রবাসীতে নিবন্ধন করতে হবে। এরপর নির্দেশনা অনুযায়ী পাসপোর্টটি স্ক্যান করতে হবে। এরপর প্রদত্ত তথ্য পাসপোর্ট ডাটাবেজের ভেরিফিকেশনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সেই মেসেজ এলেই বিএমইটির নিবন্ধনটি করা যাবে। এই মেসেজ আসতে ৭২ ঘন্টা সময় লাগতে পারে।
বিএমইটির নিবন্ধন হয়ে গেলেই প্রবাসীরা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রাপ্তির লক্ষ্যে সুরক্ষা অ্যপে গিয়ে টিকা গ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। বিএমইটি নিবন্ধন করা থাকলে সুরক্ষায় পাসপোর্ট নম্বর দেওয়ার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেটি যাচাই হয়ে যাবে। সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন হয়ে গেলে নির্ধারিত মোবাইল নম্বরে টিকা সেন্টার ও টিকা গ্রহণের তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে। এরপর সেই টিকা নিয়ে কেন্দ্রে যেতে হবে।
বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত সেবা আরও সহজ ও ডিজিটালাইজড করার লক্ষ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় গত ৮ মে এই অ্যাপটি চালু করে। এর উদ্বোধন করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ। বাংলা ট্র্যাক গ্রুপ এই অ্যাপটির কারিগরী সহায়তা দিচ্ছে। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর কাজে যুক্ত হয়েছে।
আমি প্রবাসী অ্যাপ-এ রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া: গুগল প্লে স্টোর থেকে আমি প্রবাসী অ্যাপ ডাউনলোড করুন এবং নিজের মোবাইল নম্বর ও এককালিন ওটিপি এর মাধ্যমে অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করুন। অ্যাপ এ গিয়ে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করুন | অপশনে গিয়ে রেজিস্ট্রেশনের ধাপগুলো পূরণ করে আপনার বিএমইটি ফর্মটি সম্পন্ন করুন এবং পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের জন্য পাঠান | নির্দিষ্ট করা পেমেন্ট করে বি এম ইটি নম্বরের জন্য আবেদন করুন এবং বি এম ইটি নম্বর পেতে অপেক্ষা করুন ।
অনলাইনে পাসপোর্ট যাচাইকরণ: অ্যাপ এ দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী স্ক্যানার এর মাধ্যমে পাসপোর্টটি সঠিকভাবে স্ক্যান করে নিতে হবে । পাসপোর্ট নম্বরসহ প্রদত্ত তথ্য বি এম ইটি লিংক ব্যবহার নিমিত্তে সরাসরি পাসপোর্ট ডাটাব্যাংক দ্বারা ভেরিফিকেশনের জন্য যাবে।
অ্যাপটি প্লে স্টোরে ডাউনলোডের জন্য পাওয়া যাবে- http://www.amiprobashi.com/
প্রকল্পটির উদ্যোক্তা বাংলা-ট্র্যাক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক একরামুল হকের মতে “আমি প্রবাসী, এক অত্যন্ত কার্যকর ডিজিটাল প্লাটফর্ম, যা একটি অ্যাপ এবং ওয়েব পোর্টাল, যা বিদেশে চাকরির জন্য আগ্রহী বাংলাদেশী নাগরিকদের পরিপূর্ণ সেবা প্রদান করে থাকবে, বিএমইটি রেজিস্ট্রেশনে সহযোগিতা করে সরকারি ডাটাবেসকে পরিপূর্ণ রূপরেখায় নিয়ে আসবে এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান সম্পর্কিত তথ্য সহায়তা প্রদান এর মাধ্যমে অভিবাসীদের উপকৃত করবে”।
বর্তমান কোভিড প্রেক্ষাপটে রেমিট্যান্স এর ধারা উর্দ্ধগামী রাখতে হলে আমাদের কার্যপ্রণালীকে ডিজিটাল প্রসেসে পরিচালিত করতে হবে। এক্ষেত্রে সবাই আশাবাদী যে, আমি প্রবাসী অ্যাপ এই ক্ষেত্রে এক কার্যকরী ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।