সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র প্রথম ধাপ

দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি ঘনীভূত হতে পারে। রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে। ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এটির নাম হবে ‘মোখা’। এমন তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

লঘুচাপ ও ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে ভারত-বাংলাদেশে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। সেই লঘুচাপ এখন সৃষ্টি হয়েছে।

আজ সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মঙ্গলবার (৯ মে) সকাল পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

এদিকে, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগসহ ঢাকা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, মৌলভীবাজার, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও বান্দরবান জেলা সমূহের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে ও বিস্তার লাভ করতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।

আবহাওয়াবিদ মো. শাহিনুল ইসলাম বলেন, ‘বৃষ্টি না হওয়ায় তাপমাত্রা বাড়ছে। আজ তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে। দেশের বেশির ভাগ জায়গায় তাপপ্রবাহ চলছে। তাপপ্রবাহের এলাকার সংখ্যা সোমবার আরো বাড়তে পারে।’

সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সম্পর্কে এই আবহাওয়াবিদ বলেন, ‘একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার আগে চারটি ধাপ পার হতে হয়—লঘুচাপ, সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপ ও গভীর নিম্নচাপ। পঞ্চম বা শেষ ধাপে গিয়ে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে এবং এর জন্য বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার হতে হবে।’

এদিকে, কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ দুইটি আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল বিশ্লেষণ করে আজ ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন, খুবই শক্তিশালী হবে ঘূর্ণিঝড় মোখা। এটি বাংলাদেশ উপকূলে আঘাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি লিখেছেন, আজ ৮ মে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল নির্দেশ করছে- সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় মোখা সরাসরি খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে ১৪ মে রাত ১২টার পরে থেকে এবং আমেরিকান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে- ঘূর্ণিঝড় মোখা সরাসরি চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপর দিয়ে ১৪ মে সকাল ৬টার পর থেকে স্থল ভাগে আঘাত করার সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক এই পিএইচডি গবেষক আরো লিখেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পান (২০২০ সলের ২০ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হেনেছিল- যার বাতসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৭৫ কিলোমিটার) স্থল ভাগে আঘাত করার দিন যত বেশি কাছাকাছি এসেছিল ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল নির্দেশিত পথ তত বেশি সঠিক প্রমাণিত হয়েছিল।

তিনি লিখেন, ‘দুইটি মডেলই নির্দেশ করতেছে খুবই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশ উপকূলে আঘাতের সম্ভাবনার কথা।’ তবে ঠিক কত শক্তিশালী হবে তা তিনি প্রকাশ করতে চান না।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.