দুবাই : প্রবাসে থাকা প্রতিটি মানুষের মনের আয়নায় ভেসে ওঠে দেশে ফেলা আসা দিন। হাজারো বর্ণ আর নানা সংস্কৃতির মাঝেও কাজের অবসরে সংঘবদ্ধ হয়ে এই প্রবাসীরা খুঁজে ফেরেন বাঙালিয়ানাকে।
মনেপ্রাণে ষোলআনা এসব বাঙালি কাজের অবসরে বিদেশের মাটিতেও লালন করে চলছেন নিজের আপন সংস্কৃতি।
সম্প্রতি দুবাইয়ে বাংলাদেশ সোস্যাল ক্লাবের উদ্যোগে বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
‘এসো সোনালী জৌলুসে, নতুন সৃষ্টির আনন্দ গৌরবে’ স্লোগানের এই বর্ষবরণ অনুষ্ঠান পরিণত হয় প্রবাসীদের মিলনমেলায়।
প্রবাসে জন্ম, বেড়ে ওঠা প্রজন্মের কেউ এসেছে আলতা পায়ে, গায়ে শাড়ি আবার কেউবা এসেছেন বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পোশাক পাঞ্জাবি ছেপে।
হাতে ছিল বাঙালিয়ানার অনুষঙ্গ একতারাও। বিদেশ বিভূইয়ে অন্তত একদিনের জন্য ‘খাটি’ বাঙালি হয়ে উঠেন।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের এই উৎসব নজর কেড়েছে ভিনদেশিদের। অনেকে উপস্থিতও হয়েছিলেন এই মিলনমেলায়।
আয়োজনের শুরু হয় ক্লাবের উদ্যোগে প্রকাশিত ‘আমিরাতের পথে-ঘাটে’র মোড়ক উন্মোচন দিয়ে।
ক্লাব সভাপতি নওশের আলীর সঞ্চালনায় মোড়ক উন্মোচন করেন শারজাহ ইসলামিক ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল করিম। বক্তব্য দেন বইয়ের লেখক লুৎফুর রহমান ও কামরুল হাসান জনি।
সংগঠনের অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন-নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও আবু আহাদ।
এরপর শুরু হয় দেশীয় ঐতিহ্যের নানা ঢংয়ের নৃত্য। একঝাঁক ছোট্ট সোনামণি ‘একদিন বাঙালি ছিলাম রে’ সহ নানা ধরনের গানের সঙ্গে মোহনীয় নৃত্য পরিবেশন করে। ছিল পুঁথি পাঠও।
পুঁথি পাঠ করেন ছড়াকার লুৎফুর রহমান ও কমিউনিটি নেতা মাহবুবুর রহমান।
দেশীয় খাবারের স্বাদ রাখতে দেশ থেকে আনা কদমা, বাতাসা, মুরুলি, পুলি পিঠা, খৈ, গুড়ের সন্দেশ, শেষে ইলিশ মাছের সঙ্গে নানা রকম ভর্তা আর ডাল দিয়ে পরিবেশন করা হয় বাঙালি খাবার।
জুলফিকার হায়দার খান তো বলেই ফেললেন, ‘অপূর্ব দেশের অনুভবে কাটানো কিছু সময়, মনেই হয়নি আমরা প্রবাসে।’