পাকিস্তানের অ্যাবেটাবাদের বাড়িতে লুকিয়ে থাকা ওসামা বিন লাদেনকে ২০০৬ সাল থেকে দেখভাল করছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ২০১১ সালে অর্থের কাছে নতজানু হয় তারা। আড়াই কোটি ডলারের বিনিময়ে আল-কায়েদা প্রধান লাদেনকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিক্রি করে দেয় তারা। যোগসাজশে ছিলেন পাকিস্তানের জ্যেষ্ঠ জেনারেলরা। এক নিবন্ধে এমন দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অনুসন্ধানী প্রবীণ সাংবাদিক সিমুর হার্স।
আজ মঙ্গলবার জানানো হয়, লন্ডন রিভিউ অব বুকস-এ ১০ হাজার শব্দের ওই নিবন্ধে অন্য প্রসঙ্গের পাশাপাশি লাদেনের বিষয়টিও উঠে আসে।
পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদের গোপন আস্তানায় লাদেনের অবস্থান, ২০১১ সালে বিশেষ অভিযানে তাঁর মৃত্যু, মরদেহ সমাহিত করা—এসব বিষয়ে এখন পর্যন্ত যেসব তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, তার নানা দিক চ্যালেঞ্জ করেছেন এই সাংবাদিক।
সূত্রের নাম প্রকাশ না করে হার্স দাবি করেন, পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই ২০০৬ সাল থেকে ওসামাকে গৃহবন্দী করে রেখেছিল। সৌদি আরব এ তথ্য জানত। আড়াই কোটি ডলার পুরস্কার পেতে আইএসআইয়ের এক কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রকে লাদেন সম্পর্কে তথ্য দেন।
হার্সের দাবি, লাদেনকে হত্যায় সহায়তার বিনিময়ে পাকিস্তানকে কোটি কোটি মার্কিন ডলার সামরিক সাহায্য অব্যাহত রাখার বিষয়টিই কেবল যুক্ত নয়, এর সঙ্গে পাকিস্তানি সামরিক কর্তাব্যক্তিদের ব্যক্তিগত লাভের বিষয়ও জড়িত। এই গোপন চুক্তির আওতায় পাকিস্তানি জেনারেলরা লাদেনকে হত্যায় যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করেছেন। অ্যাবোটাবাদের বাড়িতে লাদেনের কক্ষের অবস্থান সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রকে সুনিশ্চিত তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে। লাদেনকে অরক্ষিত করা হয়েছে। লাদেনকে সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্বে থাকা আইএসআইয়ের সদস্যরা সরে পড়েছেন। এলাকাটির বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মার্কিন বাহিনীর অভিযানে পাকিস্তানি বাহিনী যাতে বাধা না দেয়, তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
এই সাংবাদিকের ভাষ্য, অভিযানটি ছিল অনেকটা যাওয়া আর আসার মতো। নেভি সিলের সদস্যরা একজন নিরস্ত্র ও অক্ষম ব্যক্তিকে (লাদেন) গুলি করে হত্যা করেছেন মাত্র। এমনকি লাদেনকে ধর্মীয় রীতিতে সাগরেও সমাহিত করা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। হার্সের দাবি, লাদেনের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। অভিযান শেষে ফেরার সময় তাঁর দেহের টুকরোগুলো হিন্দু কুশ পর্বতে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়।