যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দলীয় মনোনয়ন লাভের প্রাথমিক যুদ্ধ প্রায় সমাপ্তির পথে। এতে ডেমোক্রেট দল থেকে হিলারি ক্লিনটন ও রিপাবলিকান দল থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প এগিয়ে রয়েছেন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মূল লড়াইটা হবে এই দু’জনের মধ্যেই।
আজ সেখানে ইন্ডিয়ানা রাজ্যে প্রাইমারি নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু তার আগেই সুপরিচিত সব মিডিয়া ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ডেমোক্রেট দল থেকে মনোনয়ন পাবেন হিলারি। অন্যদিকে রিপাবলিকান দল থেকে মনোনয়ন পাওয়ার লড়াইয়ে বেরিয়ে আসতে পারেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই কথা বলা হচ্ছে সিএনএনের সর্বশেষ জনমত জরিপে। সিএনএন/ওআরসি পরিচালিত এক নতুন জরিপে দেখা গেছে, নভেম্বরের নির্বাচনের জন্য রিপাবলিকান দলের টিকেট পাবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প এমনটা মনে করে শতকরা ৮৪ ভাগ মার্কিন ভোটার। অন্যদিকে ডেমোক্রেট দল থেকে এ টিকেট পাবেন ফ্রন্টরানার হিলারি ক্লিনটন এমনটা মনে করেন শতকরা ৮৫ ভাগ ভোটার। ডেমোক্রেটিক দলের শতকরা ৫১ ভাগ ভোটার বেছে নিয়েছেন হিলারিকে। অন্যদিকে ট্রাম্পকে বেছে নিয়েছেন রিপাবলিকান দলের শতকরা ৪৯ ভাগ ভোটার। মাইক্রোসফটের সার্চইঞ্জিন বিং সোমবার পূর্বাভাষ দিয়েছে যে, আগামী ৭ জুন ক্যালিফোর্নিয়ায় রিপাবলিকান দলের প্রাইমারি নির্বাচনের শেষ। ওই সময়ে ট্রাম্প অর্জন করবেন ১৩৬৬টি ডেলিগেট। যা তার প্রেসিডেন্ট মনোনয়নের জন্য প্রয়োজনীয় ১২৩৭টি ডেলিগেটের চেয়ে ১২৫টি বেশি। একইভাবে হিলারি ক্লিনটন অর্জন করবেন ২৬৭৬টি ডেলিগেট। যা তার দলীয় মনোনয়নের জন্য প্রয়োজনীয় ১৩৮৩টি ডেলিগেটের চেয়ে ৩০০টি বেশি। এর মাধ্যমে তিনি হবে যুক্তরাষ্ট্রে বড় কোন রাজনৈতিক দল থেকে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী। একই সঙ্গে যদি এই পূর্বাভাষ সত্যি হয় তাহলে বিরল আরেকটি ঘটনা ঘটবে। তা হলো এই প্রথমবারের মতো একই শহর নিউ ইয়র্ক থেকে ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান দলের প্রার্থীর আবির্ভাব হবে। তাদের দলীয় সদর দপ্তর এই নিউ ইয়র্কে।
ওদিকে ইন্ডিয়ানা রাজ্যে এক বিশাল সমাবেশে ট্রাম্পের কণ্ঠে আস্থা প্রকাশ পায়। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, তিনিই হবেন রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থী। তিনি বলেন, সততার সঙ্গে বলছি। যদি আমরা ইন্ডিয়ানায় বিজয়ী হই তাহলে কেল্লা ফতে। ট্রাম্পের এই দৃঢ়তার কারণ আছে। জরিপে দেখা গেছে, তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী সিনেটর টেড ক্রুজের চেয়ে শতকরা ১৫ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন। তাকে ঠেকাতে এখানে একজোট হয়ে মাঠে নামেন টেড ক্রুজ ও জন কাসিচ। যদি তারা এখানে তাকে আটকাতে না পারেন তাহলে ট্রাম্পের মনোনয়ন একরকম চূড়ান্ত বলতে হয়। উল্লেখ্য, ইন্ডিয়ানা রাজ্যে মোট ডেলিগেট সংখ্যা ৫৭টি। এখানে যে প্রার্থী বিজয়ী হবেন তিনি পাবেন সবগুলো ডেলিগেট। রিয়েল ক্লিয়ার পলিটিক-এর হিসাবে ট্রাম্পের রয়েছে ৯৯৬টি ডেলিগেট। তিনি নিজে দাবি করেন, কমপক্ষে ১০০১টি ডেলিগেট তাকে সমর্থন করেন। ক্রুজের রয়েছে ৫৬৫টি ডেলিগেট। গভর্নর জন কাসিচের রয়েছে ১৫৩টি ডেলিগেট। তাদের উদ্দেশ্যে ট্রাম্প বলেন, তারা শেষ হয়ে গিয়েছেন। তাদের বিদায় হয়েছে। একইভাবে হিলারির রয়েছে ২১৬৫টি ডেলিগেট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ভারমন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সের রয়েছে ১৩৫৭টি ডেলিগেট। প্রতিটি দিন মনোনয়ন পাওয়ার পথ কঠিন হয়ে উঠলেও বার্নি স্যান্ডার্স পথ ছেড়ে দিতে চান না হিলারিকে। তিনি বলেছেন, কনভেনশন হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। কিন্তু সেই কনভেনশন পর্যন্ত হিলারিকে আটকে রাখতে পারবেন তো তিনি! ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেকে যুক্তি দেখান তার আগেই স্যান্ডার্সের দৌড় শেষ হয়ে যাবে। এর ফলে নভেম্বরের নির্বাচন হবে হিলারি বনাম ট্রাম্পের মধ্যে।