ভারতের উত্তরাখন্ড রাজ্যে কংগ্রেস সরকার ভেঙে দিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়েছে।
আগামীকাল কংগ্রেস শাসিত উত্তরাখন্ডে বিধানসভায় আস্থা ভোট হওয়ার কথা ছিল। আস্থা ভোটের আগেই রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হল।
কেন্দ্রীয় সরকার শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার এক জরুরি বৈঠকে উত্তরাখন্ডে সরকারকে বরখাস্ত করে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় আজ সে সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে সই করেন।
নয় জন কংগ্রেস বিধায়ক দল ছেড়ে বেরিয়ে সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় হরিশ রাওয়াত সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা আসে। তার সরকারকে ২৮ মার্চের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে বলা হয়।
মুখ্যমন্ত্রী রাওয়াত বার বারই দাবি করছিলেন, তিনি আস্থা ভোটেই প্রমাণ করে দেবেন যে তার সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়নি। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার আস্থা ভোট পর্যন্ত অপেক্ষা না করে এর আগেই হরিশ রাওয়াত সরকারকে বরখাস্ত করল।
কংগ্রেস এর তীব্র নিন্দা করে অভিযোগ করেছে, বিজেপি ক্ষমতা ও অর্থের জোরে একের পর এক কংগ্রেস শাসিত রাজ্যে সরকার ভেঙে দেয়ার খেলায় মেতেছে।
দলের জাতীয় মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি টুইটারে লিখেছেন, ‘উত্তরাখন্ডে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হল। না স্পিকার রুলি দিয়েছেন, না আস্থা ভোট হয়েছে। এর আগেই সরকার ভেঙে দিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হল।’
হরিশ রাওয়াত বলেছেন, ‘সাংবিধানিক পদ্ধতিকে অস্বীকার করে ক্ষমতা ও অর্থবল নিয়ে বিজেপি গণতন্ত্রকে আক্রমণ করেছে।’
৭০ আসন বিশিষ্ট উত্তরাখন্ড বিধানসভায় কংগ্রেস গত নির্বাচনে ৩৬টি আসন পায়। সম্প্রতি নয় জন কংগ্রেস বিধায়ক দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি তোলেন। কংগ্রেস অভিযোগ করে, টাকা দিয়ে এবং ভয় দেখিয়ে বিধায়ক ভাগানোর খেলায় মেতেছে বিজেপি। তবে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করবেন বলেও হরিশ রাওয়াত জানিয়ে দেন। আগামীকাল অর্থাৎ সোমবার উত্তরাখ- বিধানসভায় অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল।
শনিবারই উত্তরাখন্ড বিধানসভার স্পিকার গোবিন্দ কুঞ্জওয়াল দলত্যাগী বিধায়কদের নোটিস পাঠিয়ে জানতে চেয়েছিলেন, দলত্যাগ বিরোধী আইনে কেন তাঁদের বিধায়ক পদ খারিজ হবে না। এই দলত্যাগীদের বিধায়ক পদ খারিজ হয়ে গেলে উত্তরাখন্ড বিধানসভার সদস্য সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৬৩-তে। ৩২ জন বিধায়কের সমর্থন পেলেই গরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারতেন রাওয়াত। কংগ্রেসের ২৭ জন ছাড়াও প্রোগ্রেসিভ ডেমোক্র্যাটিক ফ্র্রন্টের ছয় বিধায়কের সমর্থন ছিল রাওয়াতের পক্ষে। অর্থাৎ অন্তত ৩৩ বিধায়কের সমর্থন নিয়ে সরকার বাঁচিয়ে নিতেন রাওয়াত। কিন্তু সে সুযোগ রইল না। আস্থা ভোটের দাবি তুলে বিজেপি-ই আবার সে পথ থেকে পিছিয়ে এল।
গত মাসে অরুণাচল প্রদেশেও কংগ্রেসের সরকার ভেঙে দিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এর পর সেখানে বিজেপির সমর্থনে নতুন সরকার গঠিত হয়েছে।
আরও খবর