যেভাবে চলছে কাতারে বাংলাদেশ দূতাবাস

qatarমধ্যেপ্রাচ্যের দেশগুলোতে জনশক্তির বাজার পুনরুদ্ধার থেকে শুরু করে দেশের উন্নয়নে এসব দেশ থেকে বিনিয়োগ আনতে সরকারের কূটনৈতিক কোনো কর্মকৌশল নেই। যা আছে তাও কাজ করছে না। এসব ব্যাপারে কোনো টার্গেট ভিত্তিক কাজ নেই যা হচ্ছে এডহক ভিত্তিতে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতরা চলছেন সেভাবেই।

মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রভাবশালী দেশ হয়ে উঠেছে কাতার। ছোট এ দেশটি বিশ্বরাজনীতি থেকে শুরু করে সন্ত্রাস দমন, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে উঠে জ্ঞান নির্ভর সমাজ প্রতিষ্ঠায় বেশ অনেক দূর এগিয়েছে। তো দেশটিতেই বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত সৈয়দ মাসুদ মাহমুদ খন্দকারকে নিয়ে উঠেছে অজস্র আপত্তিকর অভিযোগ। পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে কোনো টার্গেট ভিত্তিক বিনিয়োগ বা অন্যান্য ধরনের উন্নয়ন পরিকল্পনা সম্পর্কে দিক নিদের্শনা না থাকায় বিদেশে বেশ কয়েকটি দেশে রাষ্ট্রদূতরা এমন সব আপত্তিকর কাজে জড়িয়ে পড়ছেন এবং এতে দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হচ্ছে। হয়ত এধরনের কার্যকলাপের পর সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রদূতকে তলবের পর তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার কিন্তু সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে কোনো টার্গেট ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।

কাতারে ১৭ লাখ বিদেশির মধ্যে প্রায় ২ লাখ রয়েছে বাংলাদেশি। বাংলাদেশ দূতাবাস চাড়াও বাংলাদেশ স্কুল এন্ড কলেজ, বাংলাদেশ বিমান, ইউনাইটেড এয়ার লাইন্স সহ এখানে রয়েছে বাংলাদেশে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান। কাতারে বর্তমানে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত আছেন, সৈয়দ মাসুদ মাহমুদ খন্দকার। অথচ তাকে নিয়ে কাতার প্রবাসী বাংলাদেশিরা রীতিমত বিপাকে পড়েছেন।

একই রাষ্ট্রদূত বিগত সময়ে ভারতের দিল্লিতে ও লন্ডনে নানান কেলেঙ্কারির ঝড় তোলার পর শেষ পর্যন্ত তাকে কাতারে বদলি করা হয়। আসছেন বর্তমান রাষ্ট্রদূত হিসেবে। লন্ডনে তার স্ত্রীর সাথে প্রবাসি বাংলাদেশি এক ছেলের সাথে ঝগড়াঝাটি হয়। বর্তমানে কাতারে যা দেখা যাচ্ছে রাষ্ট্রদূত সৈয়দ মাসুদ মাহমুদ খন্দকার যে একজন মহামান্য প্রতিনিধি, তার স্ত্রী মহামান্য প্রতিনিধির স্ত্রী, এসব বিষয় প্রচারণায় মান্যবরের সময় চলে যায়। আর তার এসব কাজে সহযোগী হিসেবে আছেন সম্প্রতি বিমানের ব্যাগেজ কেলেঙ্কারি নিয়ে ধরা পরা ২ প্রকৌশলী। প্রকৌশলী জালাল ও আনোয়ার হোসেন আকন দূতাবাসের এধরনের পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছেন।

রাষ্ট্রদূতের নানান অনিয়মের মধ্যে রয়েছে, দূতাবাসের কর্ম দিবসে সকাল ১০টায় কোন জাতীয় দিবস না থাকার পরও উইমেন্স এসোেিসয়শন করে সার্ভিস বন্ধ রাখা হয়। এসময় মরুভূমির প্রখর খরতাপে প্রবাসি বাংলাদেশিরা দূতাবাসে এসে কাজের জন্যে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রদূত তার সহধর্মিণীকে ম্যাডাম হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কাজেই ব্যস্ত থাকেন।

কিছুদিন আগে রাষ্ট্রদূত নিজস্ব সুবিধা নিয়ে দূতাবাসের নামে একটি টয়োটা প্রাডো গাড়ি ক্রয় করেন এবং এতে অতিরিক্ত টাকা খরচ হলেও মন্ত্রণালয়ের কোনো ধরনের অনুমতি নেয়া হয়নি। ওই গাড়ি নিয়ে রাষ্ট্রদূত সৌদি আরব যাচ্ছেন ওমরা করছেন। এভাবে গাড়িটি দুর্ঘটনায় পতিত হবার পর এখন তা কোথায় আছে কারো জানা নেই।

কাতারে বাংলাদেশ স্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিং বডির মেয়াদ না থাকার পরও নতুন কমিটির ব্যাপারে পদক্ষেপ না নিয়ে পিছনের তারিখ দিয়ে কাজ করার চর্চা চালু আছে। সাবেক রাষ্ট্রদূতের মত স্কুলের নামে ভিসা বের করে নিজেদের অযোগ্য লোকজনকে স্কুলের জন্য চাকরি দিয়ে নিয়ে আসার মত কাজ করেছেন বলে নয়া রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। রাষ্ট্রদূত সৈয়দ মাসুদ মাহমুদ খন্দকারের এক ভাইকে কাতার বাংলাদেশ স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী পরিচালক হিসেব নিয়ে আসার জন্য ভিসা তৈরি হয়ে গেছে। এর আগের রাষ্ট্রদূতের এক আত্মীয় যিনি স্কুলের পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন অথচ তার অযোগ্যতা প্রবাসি বাংলাদেশিরা রীতিমত ক্ষুব্ধ। স্কুলের নতুন ভবন তৈরিতে উঠেছে দুর্নীতির অভিযোগ। এভাবে অনিয়ম বারবার ঘুরে ফিরে আসে কিন্তু পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কেউ তা দেখভাল করেন না।–আমাদের সময়.কম

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.