করোনার প্রকোপ বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রে, ফ্লোরিডায় ৫৪ হাসপাতালের আইসিইউ পরিপূর্ণ
যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস কতটা ভয়াল রূপ ধারণ করেছে তা ফ্লোরিডার পরিস্থিতিই বলে দিচ্ছে। এ রাজ্যে অন্তত ৫৪টি হাসপাতালেই ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) কোনো বেড খালি নেই। সবগুলো হাসপাতালের আইসিইউ বেড পূর্ণ হয়ে গেছে এবং বেডসংখ্যা শূন্য দেখাচ্ছে। আজ বুধবার (২৯ জুলাই) এজেন্সি ফর হেলথ কেয়ার অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এএইচসিএ) এমন তথ্য দিয়েছে।
এএইচসিএ জানায়, এসব হাসপাতালের মধ্যে ১০টি মায়ামি-ডেড কাউন্টিতে এবং তার আটটি ব্রোওয়ার্ড কাউন্টিতে। গোটা ফ্লোরিডা রাজ্যে মাত্র ১৬ শতাংশ আইসিইউ বেড খালি আছে বলে জানায় এএইচসিএ।
এদিকে ফ্লোরিডার জ্যাকসন হেলথ সিস্টেমে ২৫ শতাংশ কডিভ-১৯ রোগীরই আইসিইউতে চিকিৎসা নেয়ার প্রয়োজন পড়ছে বলে জানান মায়ামি-ডেড কাউন্টি হাসপাতালের মুখপাত্র জেনিফার পিয়েদ্রা। তিনি জানান, জ্যাকসন হেলথকে ২০০ নার্স, ৫০টি রেস্পিরেটরি থেরাপি ও ১০০ নার্সিং সাপোর্ট স্টাফ দিয়েছে ফ্লোরিডা রাজ্য। এছাড়া বাড়তি ১০০ নার্স চুক্তিতে নিয়োগ করেছে জ্যাকসন হেলথ।
পিয়েদ্রা বলেন, জ্যাকসন হেলথ বর্তমানে সাতজন কভিড-১৯ আক্রান্ত শিশুকেও চিকিৎসা দিচ্ছে। তার মতে, মহামারী শুরুর পর ১৮ বছরের নিচের শিশুদের খুব কমই হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে হয়েছে। তিনি জানান, জ্যাকসন হেলথ সিস্টেমে সাধারণ বেড রূপান্তর করে আইসিইউ বেডের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। এজন্য প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট ও স্টাফ আনা হয়েছে।
করোনাভাইরস যখন আমেরিকান জনগোষ্ঠীকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে তখন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, এখনই যেন বিধিনিষেধ শিথিল করা না হয়। বরং তারা মানুষকে ঘরের বাইরে মাস্ক পরার নির্দেশ দেয়া হয়েছে প্রায় প্রতিটি রাজ্যে এবং জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে কোথাও কোথাও পার্টি, কনসার্ট কিংবা সমাবেশও চলছে। নিউ জার্সির জ্যাকসনে এক বাড়িতে ঘরোয়া অনুষ্ঠানে ৭০০ অতিথির সমাগম হয়। পরে পুলিশ ৫ ঘণ্টার চেষ্টায় সেটি পন্ড করে। সেখানে অনুমতি ছিল মাত্র ১০০ মানুষ সমাগমের।
নিউইয়র্কে ‘সেইফ অ্যান্ড সাউন্ড’ নামক এক কনসার্টে মানুষজন কোনো ধরণের সামাজিক দূরত্ব কিংবা স্বাস্থ্যবিধি মানেননি। এর একটি ভিডিওচিত্র দেখার পর পুলিশ তদন্তে নেমেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ। সংক্রমণ কিংবা মৃত্যু কোনোটিই কমার কোনো লক্ষণ নেই। অথচ এমন পরিস্থিতিতেও নির্বাচনী প্রচারণা থেকে নেই। ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ বুধবার দক্ষিণের রাজ্য টেক্সাসে যান, যেটিতে করোনাভাইরাস প্রচÐভাবে আঘাত হেনেছে। অন্তত ২২টি রাজ্যে আগের সপ্তাহের চেয়ে সংক্রমণ বেড়েছে।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্যমতে, আজ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ৪৩ লাখ ৬২ হাজার মানুষ আক্রান্ত শনাক্ত আর ১ লাখ ৪৯ হাজার ৩৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিশে^ মোট সংক্রমণ ১ কোটি ৬৭ লাখ ৭৬ হাজার আর মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৬১ হাজারেও বেশি মানুষের। সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটিতেই বিশ্বে শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র।
সূত্র: সিএনএন
